স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড়: নেপালের কাঠমান্ডুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পয়নশিপে শিরোপা জেতানো গোলরক্ষক ইয়ারজান ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন নিজ গ্রামে। চ্যাম্পিয়ন-কন্যাকে ফুলের মালা এবং উষ্ণ ভালোবাসায় বরণ করে নেন গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যরা।
৩০ মার্চ শনিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন ইয়ারজান। তাকে বরণ করার জন্য সকাল থেকেই ভির করছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। স্বাগত জানাতে ফুলের তোড়া নিয়ে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন।
এর আগে, ইয়ারজানকে গাড়ি বহরে জেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাকে বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছিল। দুই হাত তুলে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেও দেখা যায়।
ইয়ারজান বেগমের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে। তিনি সেখানকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে।
ইয়ারজানদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাফ শিরোপা জেতা এই গোলরক্ষকের আসার খবরে সকাল থেকেই অপেক্ষার প্রহর গুণছিলেন বিভিন্ন বয়সি শতশত মানুষ। ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীরাও। সকলের শুভেচ্ছায় আপ্লুত হয়ে পড়েন ইয়ারজান।
তিনি বলেন, সাফ বিজয়ের পর আজকে প্রথম বাড়িতে এসেছি। এসে খুব আনন্দিত হয়েছি আমি। জীবনেও ভাবিনি আমার বাড়িতে এত মানুষ আসবে। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ, বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার কোচ টুকু ফুডবল একাডেমির পরিচালক টুকু রেহমানকে। ফুটবলে আরও ভালো করতে চাই, স্বপ্ন দেখি জাতীয় দলে খেলবো।
ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার মেয়ের সাফল্যের জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত। আমি চাই, আমার মেয়ে বারবার এমন সাফল্য বয়ে আনুক।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, ইয়ারজান আমাদের ইউনিয়নের নাম উজ্জ্বল করেছে। আমি পুরো ইউনিয়নের গণমানুষের পক্ষ থেকে ইয়ারজানকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাচ্ছি ইয়ারজানকে গড়ে তোলার কারিগর টুকু একাডেমিকে। এই একাডেমির মাধ্যমে আরও ইয়ারজান তৈরি হোক, এই প্রত্যাশা করছি।
টুকু ফুটবল একাডেমির পরিচালক টুকু রেহমান বলেন, ইয়ারজানের উপর আমার আস্থা ছিলো, সে ভালো কিছু করবে, করেছেও। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা এনে দিয়েছে দেশকে। ইয়ারজান তার সাফল্যে আমাকে এবং আমার একাডেমিকে গর্বিত করেছে। গ্রামগঞ্জ থেকে এমন আরও ইয়ারজান যেন তৈরি করতে পারি, সবার কাছে এই দোয়া চাই।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ইয়ারজান আমাদের পঞ্চগড়ের গর্ব। সে পঞ্চগড়ের নাম উজ্জ্বল করেছে। তার এই গৌরবের পাশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন রয়েছে। সাফসেরা এই গোলরক্ষককে যেন আর কুড়েঘরে থাকতে না হয়, এজন্য দুই কক্ষেরর একটি সেমি পাকাঘর করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া তার পরিবারকে একটি ওয়াশব্লক ও সুপেয় পানির ব্যবস্থার কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ নেপালের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে কেবল গোলরক্ষক ইয়ারজানের বীরত্বেই। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের ট্রফিটাও নিজের করে নেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available