বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরে এক প্রসাবীর স্ত্রীকে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে দেখে ফেলায় এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে দুই পা ও হাত ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ওই যুবক। মামলার ৮ দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে আসামিকে গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। এদিকে অসহায় গুরুতর আহত যুবক টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি রাত ১০টায় উজিরপুর উপজেলার পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের মৃত আলম হাওলাদারের ছেলে তাইজুল ইসলাম টিপু(৩০) কে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোফাজ্জেল হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে একই এলাকার রিফাত হোসেন(২৩), আনোয়ার হোসেন(৫০), রাজিব চৌকিদার(৩৪), জাহিদ মুন্সি(৩৫), মাদকব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম(৪০), মৃদুল হাওলাদার(২০)সহ আরও ৪/৫ জন মিলে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে টিপুর দুই পা ও হাত গুড়িয়ে দেয়।
এ সময় ভিকটিম টিপুর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি আহতের মা তাহমিনা বেগম উজিরপুর মডেল থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে আহত টিপুর চাচা আমীর হোসেন হাওলাদার ও শাহীন হাওলাদার জানান, আসামিদের আত্মীয়-স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় এবং উজিরপুর উপজেলার শোলক গ্রামের এক এন.এস.আই কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আসামিদের পক্ষে তদবির করছেন তারা।
এদিকে হামলার পেছনের রহস্য খুঁজতে গেলে তাইজুল ইসলাম টিপুর ফুফু বৃদ্ধ রাশিদা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে একই বাড়ির কাতার প্রবাসী নাসির উদ্দিন হাওলাদারের স্ত্রী আইরিন বেগম(২৫) তাদের বাড়ির কোয়াটার মাইল দূরে রাত ৩টায় ভবনের কাজ দেখতে বের হন। এত রাতে বের হতে দেখে তার পিছু নেন তাইজুল ইসলাম টিপু। পরে সে তার ভাবী আইরিন বেগমকে আপত্তিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকের সাথে দেখতে পান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে তাৎক্ষণিক আইরিন বেগম বাড়িতে গিয়ে উল্টো দেবর টিপুর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন।
ঘটনার দুই দিন পরে ওই বাড়ির সাবেক ইউপি সদস্য সালেক হাওলাদার ও ফুফু রাশিদা বেগমসহ বাড়ির অন্যান্য লোকজন উভয়কে নিয়ে বৈঠক বসেন। বৈঠকে টিপুকে তাৎক্ষণিক চরথাপ্পর দিয়ে এলাকাছাড়ার নির্দেশ দেন এবং আইরিনকেও সংশোধন হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এই ঘটনার জেরে আইরিন বেগমের পিতা একই এলাকার আনোয়ার হোসেনসহ ৬ জন মিলে মূল ঘটনার দুই মাস পর ২৫ জানুয়ারি রাত ১০টায় হামলা চালিয়ে টিপুকে হাত পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেয়।
ফুফু রাশিদা আরও জানান, আমার ভাইয়ের ছেলে টিপু বাঁচবে না। ওর দুটি পা, হাত, কিডনি ও লিবার অচল হয়ে গেছে। মাথায় প্রচন্ড আঘাত, সে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাকে বাঁচাতে এবং আসামিদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জাফর আহম্মেদ জানান, আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available