কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মুদি দোকানে চুরির অভিযোগে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে (১১) গাছে বেঁধে মারধর করা, সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়ানো ও চুলকাটার অপরাধে ৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আসামিরা হলেন- উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের মৃত নজির উদ্দিনের ছেলে সামছুল হক (৫০), মৃত আদু শেখের ছেলে মনোহার শেখ মুনা (৫০), মৃত আহাদ আলীর ছেলে মো. সোলাইমান (৫৫), আতিয়ার রহমানের ছেলে মো. রিফাত (২০) ও সদর থানার ফুলতলা এলাকার নুর হোসেনের ছেলে মো. জিহাদ (৩৫)। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অপরজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
ঘটনার শিকার ওই মাদ্রাসা ছাত্র রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং কুষ্টিয়া মাদ্রাসাতুল আবরার মাদ্রাসার হাফেজজিয়া কওমী ছাত্র।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ওই মাদ্রাসা ছাত্র একটা সময় কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর এলাকার দারুল আহাদ আল ইসলামিয়া নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। গত রোববার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্র বর্তমান মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে পূর্বের মাদ্রাসা আলাউদ্দিন নগরে আসে। এরপর গত সোমবার ভোর রাতে টিনের বেড়া কেটে মাদ্রাসার পাশের সোলাইমানের মুদি দোকানে ঢুকে বিষ্কুট, জুস ও খাদ্যসামগ্রী খায়। সেসময় আসামিরা টের পেয়ে ওই মাদ্রাসা ছাত্রকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীর পুড়িয়ে দেন এবং মাথার চুল কেটে দেন। এমন নির্মম নির্যাতন চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত।
এরপর খবর পেয়ে ওই ছাত্রের মা তাকে উদ্ধার করে এবং সোমবার রাত ১২টার পরে ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলায় রাতেই আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আর মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
ওই মাদ্রাসা ছাত্রের মা বলেন, আমার ছেলে ক্ষুধা নিবারনের জন্য টিনকেটে দোকানে ঢুকে বিস্কুট ও জুস খেয়ছিল। সেজন্য তাকে চুরির অপরাধে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করেছে, সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে, মাথার চুল কেটেছে। আমি সু্ষ্ঠ বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি।
মারধর ও চুলকাটার ঘটনা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত দোকানদারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দোকানে ঢুকে চুরি করেছিল মাদ্রাসা ছাত্র। তাকে হাতেনাতে ধরে মারধরা করা হয়েছিল। স্থানীয় ছেলেপেলে চুল কেটেছিল। এখন চুলকাটাই বড় অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা আসলে ভুল হয়েছে।
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, চুরির অভিযোগে একজন মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধর, সিগারেটের আগুনে পুড়ানো ও চুলকাটার ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ছাত্রের মা। মামলায় ৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available