নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে ক্যাম্পাসে শান্তি ফিরবে বলে মনে করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
২৫ আগস্ট রোববার সকালে মমেকের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ২৪ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ কলেজ কাউন্সিলের জরুরি সভায় বসে। সভায় ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধসহ চারটি সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো- মমেক ক্যাম্পাস, ছাত্র ও ছাত্রী হোস্টেলে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্রসংসদ, ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দল), শিক্ষক রাজনীতি (স্বাচিপ, বিএমএ, ড্যাব ও অন্যান্য) এবং কর্মচারীদের যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের রাজনীতি সমূলে নিষিদ্ধ।
এক্ষেত্রে ক্যাম্পাস বা হোস্টেলে কেউ রাজনীতিতে জড়িত প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া), বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত এবং ২৪ আগস্ট ২৪ তারিখে শিক্ষক কাউন্সিলের জরুরি সভায় উপস্থিত থাকা কোনো শিক্ষার্থীকে কোনো শিক্ষক ভবিষ্যতে অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হেনস্তা করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত।
এছাড়া, কলেজে এবং হোস্টেলে র্যাগিং ও চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি জড়িত শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে অবস্থান, অ্যাকাডেমিক ক্লাস ও ক্যাম্পাসে আগমনের নিষিদ্ধকরণ, ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ আবাসনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সরাসরি বিরোধিতাকারী, হুমকি প্রদানকারী এবং শান্তি মিছিলের আয়োজক শিক্ষকদের পদত্যাগ/বদলি/লিখিত ক্ষমা প্রার্থনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র রাজনীতির কারণে তারা দীর্ঘদিন অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। শিক্ষকদেরও তটস্থ করে রাখত ছাত্রলীগ। কেউ তাদের অত্যাচারে প্রতিবাদ করতে পারত না। কলেজে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় সবাই খুশি।
কলেজের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরেননি। তারা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শনিবার ক্লাস বর্জন করে কলেজের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতিসহ চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ৬০-৭০ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল কাদের। তিনি চুক্তিভিক্তিক অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available