রাঙামাটি প্রতিনিধি: টানা বর্ষণে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। ৬ আগস্ট রোববার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা দিঘীনাল সড়কের ১৬ কিলোমিটার দুই টিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটলেও এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, রাতে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে একটি গাছসহ পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে। খবর পেয়েই সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে। খাগড়ছড়ি সড়ক জনপদ বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, এই সড়কের ১৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১০টি পয়েন্টে পাহাড় ধসের ঝুঁকি আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাল পতাকা টানিয়ে স্থানীয় ও সড়কে যাতায়াতকারীদের সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে রাঙামাটি শহরে ঝূকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে আনতে গতকাল থেকে আজ সারাদিন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তাগণ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। জেলা শহরের ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের এনে রাখা হচ্ছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খাবার বিতরণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
অতিভারী বর্ষণের ফলে ইতোমধ্যেই রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার নৌ-যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক।
জানা গেছে, রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে চার হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে। এসব নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে পুরো শহরে মাইকিংয়ের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবকসহ ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাতে টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টি আর বজ্রপাতে রাঙ্গামাটিতে ঘটে যায় স্মরণকালের পাহাড় ধসের ঘটনা। ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় পাঁচজন সেনাসদস্য, নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে শহরের মানিকছড়িতে একটি সেনা ক্যাম্পের নিচে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের উপর ধসে পড়া মাটি অপসারণ করতে গিয়ে পুনরায় পাহাড় ধসের মাটি চাপা পড়ে নিহত হন ওই ক্যাম্পের দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচ সেনাসদস্য। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মানিকছড়ি শালবাগান অংশে ১০০ মিটার রাস্তা সম্পূর্ণ ধসে গিয়ে দীর্ঘ ৯দিন সারাদেশের সাথে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available