চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঁদাবাজি, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তিন পুলিশ সদস্যের নামে মামলা হয়েছে। এই মামলায় পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ১৬ অক্টোবর বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল হক এই আদেশ দেন।
চাঁদাবাজি, হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলা করেন ডা. মোহা. ইসমাইল হোসেন (৪৬)। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নয়াগোলাহাট এলাকায় এবং তিনি বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে কনসালটেন্ট (অর্থ-সার্জারি) হিসেবে কর্মরত আছেন।
মামলায় তিনজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ (৪৩), কনস্টেবল খাদেমুল ইসলাম (৩৮) এবং গোমস্তাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন (৫৫)। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ ডা. ইসমাইল হোসেনকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবী করেন। ডা. ইসমাইল চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে ১২ তারিখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শান্তিমোড় এলাকায় অবস্থিত সেবা ক্লিনিকে ডা. ইসমাইল হোসেনের চেম্বারে এসে হট্টগোল সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে ডা. ইসমাইল হোসেনকে গালিগালাজ করে সাবেক এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ সার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করে। পরবর্তী সময়ে ডা. ইসমাইলকে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি করেন।
মামলার বাদী ডা. ইসমাইল হোসেন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিবির সাবেক এসআই জাহিদ বহু দিন যাবৎ চাঁদা নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলো। আমি তাকে চাঁদা না দিলে সেবা ক্লিনিকে আমার উপর হামলা করে। তার সাথে একজন কন্সটেবল ছিল খাদেমুল সেও আমার উপর হামলা করে। এই হামলার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আমার কাছে সংগ্রহ করা আছে। আমাকে আরও বেশি হয়রানি করার জন্য সেই সময়ে গোমস্তাপুর থানার ওসি জসীম উদ্দিনকে দিয়ে আমার অফিসে হানা দিয়েছিল। আমাকে অফিস থেকে বের করে দিয়েছিল। এছাড়া বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছিল।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. নূরে আলম সিদ্দীকি আসাদ বলেন, সাবেক ডিবি কর্মকর্তা এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত অবস্থায় ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে হয়রানি, চাঁদাবাজি ও নির্যাতন করেছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিকিৎসক সমাজের উপর আঘাত করেছেন এবং তাদের কাছে চাঁদা চেয়েছেন। ২০১৯ সালের দিকে এসআই জাহিদ তার বাহিনীকে নিয়ে গিয়ে ডা. ইসমাইলের কাছে চাঁদা দাবী করেছেন এবং চাঁদা না পেয়ে ডা. ইসমাইলকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেছেন। এছাড়া সেই সময় আমার মক্কেল গোমস্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করতেন। সেখানে গিয়েও তাকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available