আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি: মজুরি বোর্ড ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রত্যাখান করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাংচুরের ঘটনায় শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শতাধিক পেশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বন্ধ কারখানার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
১১ নভেম্বর শনিবার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার নরসিংহপুর, ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, ছয়তলা, নিশ্চিন্তপুর, কাঠগড়া, আমতলা, বড় রাঙ্গামাটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পোশাক কারখানার মূল ফটকে বন্ধের নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে।
টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড, দ্যাটস্ ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেড, অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেড, হা-মীম, শারমীন, পাইওনিয়ার লিমিটেড, বানদো ডিজাইন লিমিটেড এবং জিরাবো-বিশমাইল সড়কের এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, ডুকাটি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আগামী এ্যাপারেল লিমিটেড, ক্রোসওয়্যার লিমিটেড, সেইন এ্যাপারেলস লিমিটেড, টেক্সটাউন লিমিটেড, অরনেট নীট গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ প্রায় শতাধিক পোশাক কারখানার গেটে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে।
শারমিন গ্রুপের ইশায়াত এ্যাপারেলস লি: কারখানার গেটে টাঙ্গানো নোটিশে বলা হয়, গত ৩০ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ৯ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত এই কারখানার শ্রমিকগণ বেআইনিভাবে কাজ বন্ধ রেখে সকাল বেলা হাজিরা দিয়ে বের হয়ে চলে যায়, এছাড়াও শ্রমিকগণ কারখানার অভ্যন্তরে এবং বাইরে ব্যাপক ভাংচুর, মারামারি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, যাতে কোম্পানির সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি ও আর্থিক ক্ষতিসাধনও হয়। যদিও জাতীয় উন্নয়ন ও ফ্যাক্টরির উৎপাদনের স্বার্থে অনূকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য দুই দিন স্ববেতনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তথাপিও তারা ফ্যাক্টরিতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারামারি ও ভাংচুর অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কলকারখানা অধিদপ্তর, বিজিএমইএ এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বার বার কারখানায় কাজে যোগদান করার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করে নাই, বরং বেআইনি ধর্মঘট চালিয়ে যায়। যা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ মোতাবেক অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। এমতাবস্থায়, বেআইনি ধর্মঘটের কারণে কোনক্রমেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সম্ভব নয় বিধায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হল যা, ১১/১১/২০২৩ থেকে কার্যকর হবে এবং এটি সকলের জন্য প্রযোজ্য।
এ ধরনের নোটিশ বন্ধ হওয়া সকল কারখানার ফটকে ঝুলানো রয়েছে। কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়ার বিষয়টি শ্রমিকদের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়েও জানিয়ে দিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের মুখে শতাধিক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমাদের কারখানা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন চিঠি দেয়নি। তবে বিভিন্নভাবে আমরা বন্ধের খবর পেয়েছি। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় অন্যান্য দিনের মত আজও আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available