মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ১১টি প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা মিললেও বহাল তবিয়তে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান।
স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে, কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। আবদুল মান্নান শিবালয় উপজেলা আলীগ কার্যকরী পরিষদের সদস্য। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন ব্যক্তি হওয়ায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করাই তার নেশা হয়ে উঠেছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
মান্নানের আত্মসাৎকৃত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট ৫ লাখ টাকা, কোদালিয়াা মসজিদে ৫০ হাজার টাকা, খানপুর মসজিদে ৫০ হাজার টাকা, রূপসা মসজিদে ৫০ হাজার টাকা, কোদালিয়াা ঈদগা মাঠে ১ লাখ টাকা, শালজানা একির বাড়ি থেকে দুলাল ভৌমিকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাসহ কয়েকটি রাস্তা মেরামতের জন্য ৩ লাখ টাকা তাকে দেয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এসব প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করায় এলাকাতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মান্ননের বিরুদ্ধে একাধিক স্থানে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না হওয়ায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, ওয়াাহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রকল্পের কাজ অংশিক করেছেন তিনি। তবে যতটুকু হয়েছে এলাকাবাসী ও মিডিয়ার কারণে করেছেন বলে জানান তারা। এলাকাবাসীর দাবি, সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে কাজ না করে মান্নান আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি, দতন্ত সাপেক্ষে মান্নানকে আইনের আওতায় আনা হোক।
উলাইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন, ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর চাপের মুখে রূপসা ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট প্রকল্পের নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠায় তড়িঘড়ি করে ওই মাঠে ৩০-৩৫ ট্রাক মাটি ফেলেন তিনি।
এ বিষয়ে রূপসা ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন শফি বলেন, বিদ্যালয় মাঠ ভরাটের কাজ আসার বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে জানতে গেলে তিনি আমার সঙ্গে অশোভনীয় আচরণ করেন। মাঠ ভরাটের কাজে আমাদের বিদ্যালয়ের কাউকে রাখা হয়নি। কত টাকার প্রকল্প তাও আমাদেরকে জানানো হয়নি।
উলাইল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শামসুল হক, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আফতাব উদ্দিন বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব কৃষ্ণের সহযোগিতায় স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের নামে বিভিন্ন প্রকল্প এনে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান খানের কাছে জানতে চেয়ে মুটো ফোনে কল করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব কৃষ্ণ বলেন, তিনি এখন ওখানের দায়িত্বে নেই। এখন তিনি কথা বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলাল হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। প্রকল্পগুলো সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available