শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মো. কামরুলের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের সাক্ষর জাল করে বিভিন্ন প্রকল্প এবং উন্নয়নমূলক কাজের তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করেছেন উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অফিস সহায়ক কামরুল তার সহোদর ভাই লুৎফর রহমান কালু, উজ্জল এবং তার মায়ের নামে একাধিক ব্যাংকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা জমা রেখেছেন। পরবর্তীতে টাকাগুলো উত্তোলন করেছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়।
এলাকাবাসী জানান, কাগমারী পাড়া গ্রামে কামরুল, তার ভাই এবং তার মায়ের নামে অন্য মানুষের কাছ থেকে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার জমি বন্দকী নিয়েছেন। ওই এলাকার দিলরুবা ইয়াসমিন, সালমা আক্তার, গুডু আজিজ শেখসহ আরও অনেকের কাছ থেকে জমি বন্দকী নিয়েছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও অনলাইনে নিউজ প্রকাশ হওয়ায় তাদের একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে তার শ্বশুর বাড়িতে রেখেছে।
কামরুলের নামে উপজেলার সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. নার্গিস বেগমের অফিস সহায়ক মো. কামরুল ইসলাম গরিব ঘরের সন্তান। তার এক ভাই চায়ের দোকান করেন। উপজেলা পরিষদের চেযারম্যান আব্দুল হালিমের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মোছা. নার্গিস বেগম উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নতুন চেয়ারম্যান হওয়ায় কিছু বুঝতে না পারার সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প শুধু মাত্র কাগজ কলমে দেখিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোছা. নার্গিস বেগমের স্বাক্ষর জাল করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় অফিস সহায়ক মো. কামরুল। এ বিষয়ে চেয়াম্যানকে অবগত করলে তিনি চুপ থাকেন।
অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, অফিস সহায়ক কামরুল ঢাকা মোহাম্মদপুরে ২১০০ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার মূল্য ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। গাজীপুর উপজেলা শ্রীপুরের মাধখোলা শিল্প এলাকায় ৬ শতাংশ জমি কিনেছেন, যার মূল্য ৭০ লক্ষ টাকা। ১০ লক্ষ টাকা অফিস সহায়ক কামরুলের বিভিন্ন একাউন্টে জমা রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক কামরুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনূর রশিদ বলেন, অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে দেয়া হয়েছে। আমি একটি অনুলিপি পেয়েছি। দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেরা পদক্ষেপ নিতে পারে অথবা আমাকে দায়িত্ব দিলে আমি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. নার্গিস বেগম জানান, অফিস সহায়ক মো. কামরুলের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগের বিষয়ে তিনি জেনেছেন। এ বিষয়ে দুদক তদন্ত করছে, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তিনি শাস্তি পাবেন।
তার সাক্ষর জাল বা নকল করার বিষয়ে তিনি জানান, তিনি এখনও জানেন না কোন কোন জায়গায় স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, স্বাক্ষর দেখে তিনি বলতে পারবেন সেগুলো তার কি-না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available