লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে প্রবাসী সবুজের ঘর ভাঙচুর করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ফিরোজসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২১নং টুমচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মমিনের দোকান সংলগ্ন স্থানে।
১৪ জুন শুক্রবার সকাল ১০টায় ফিরোজের পিতা মিয়ারদ্দি, তার ভাই পারভেজসহ ৪/৫ জন লাঠিসোঁটা, দা-ছেনি নিয়ে এসে প্রবাসী সবুজের একটি টিনের বাউন্ডারিসহ ভিতরের গাছগাছালি সব ভেঙ্গে চুরমাচুর করে দিয়ে চলে যায়।
খবর পেয়ে প্রবাসী সবুজ ছুটে গিয়ে দেখে তার সব ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। এতে তার প্রায় ১ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয় । এর আগে তারা সবুজের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন রকম হুমকি ধমকি দিয়ে আসে। সবুজকে না পেয়ে পরবর্তীতে তারা সবুজের জমি দখল করতে টিনের বাউন্ডারি কেটে ভাঙচুর করে।
এমন পরিস্থিতিতে সবুজ আতঙ্কে দিনযাপন করছে। পরে ভুক্তভোগী প্রবাসী সবুজ হামলাকারী ফিরোজের (৩৫) পিতা মিয়ারদ্দিকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে সবুজ স্থানীয় মাহমুদুল্লাহর কাছ থেকে ১৯ শতাংশ ১২ আনা জমিন ক্রয় করেন। তারপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সবুজ সে জমি নিজে ভোগ দখলে আছেন। সবুজ ২০১৪ সালে জমির নামজারি এবং বর্তমানসহ পুরো খাজনা দাখিলা কেটে রাখে নিজের নামে। কিন্তু হঠাৎ করেই উড়ে এসে জুড়ে বসার মত ভাব দেখাচ্ছেন ফিরোজ। ফিরোজের দাবি সবুজের জমিতে তার ৬ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করা আছে । যা সে গত মাসের ১৩ তারিখে রেজিস্ট্রার করেন। কিন্তু সবুজ তাকে দলিল দেখাতে বললে সে দলিল দেখাতে অপারকতা প্রকাশ করে । দলিল অনুযায়ী জমির পাওনা থাকলে নিয়ে যাবে, কিন্তু প্রকাশ্যে লাঠিসোঁটা দিয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলে এভাবে বাউন্ডারি ভাঙচুর করে দিয়ে চলে যাওয়াটা আইন বহির্ভূত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযুক্ত ফিরোজ সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি আইনের বাহিরে কাজ করছি এটা অস্বীকার করার কিছু নাই। তাকে আমি নিষেধ করছি এখানে কাজ না করার জন্য তারপরও সে কাজ করছে। আজকে ইট ডুকাইতেছে একারণে আমরা সেখানে গিয়েছি। তবে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কোন লাভ হয় নাই এটার একটা মিমাংসা হওয়া দরকার।
ভুক্তভোগী প্রবাসী সবুজ বলেন, আমি ২১ বছর আগে এই জমিন ক্রয় করেছি আমার ১৯ শতাংশ ১২ আনা সম্পত্তির খাজনা এবং নামজারিও আমার নামে। সম্প্রতি বিদেশ থেকে এসে আমি চার লক্ষ টাকা দিয়ে জমিটা ভরাট করেছি। ইতিমধ্যে জমিনের চারপাশে আমি টিন দিয়ে বাউন্ডারি দিয়েছি।
হঠাৎ করে শুক্রবার ১৪ জুন সকাল বেলা ফিরোজের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে আমার জমির সকল বাউন্ডারি কেটে তচনচ করে দেয়। এতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। আমি প্রশাসনের কাছে এর উপযুক্ত বিচার চাই। আমি খুবই আতঙ্কিত ও শঙ্কায় আছি বলেও জানান তিনি।
উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সম্পত্তি পেলে সম্পত্তি নিবে, কিন্তু এভাবে একজনের জমিতে এসে বাউন্ডারি ভেঙ্গে ফেলা, ক্ষতি করা, এটা কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। ওই সময় যদি প্রবাসী সবুজ থাকতো, হয়তো এখানে অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতো।
তবে এই জমিটির বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অবগত আছেন বলে উভয়পক্ষ জানালেন। বিষয়টি জানতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন লোলাকে বারবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
সদর থানার সেকেন্ড অফিসার বিকাশ বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগের আলোকে আমরা বিষয়টি তদন্ত করব।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available