কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ম ধাপে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জমে উঠেছে প্রচার প্রচারণায়। সদর থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লা এমনকি গ্রাম গঞ্জের চায়ের দোকানে আলোচনা সমালোচনায় এক এক জন একেক প্রার্থীর পক্ষে জয় পরাজয়ের হিসাবে নিকাশ কষছে।
এলাকার সবর্ত্রই এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী আমেজ, বইছে নির্বাচনী ঝড়ো হাওয়া। এই উপজেলাতে সব চাইতে আকর্ষণীয় বিষয় হল বাব-ছেলে ও ভাবি দেবরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জমে উঠা নির্বাচন।
প্রার্থীরা নিজের জয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যে প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিটি জনপদ ও ভোটারের বাড়ি বাড়ি চষে বেড়াচ্ছেন। বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করার ফুরসত নেই প্রার্থী ও কর্মীদের। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে নিজের পরিবারসহ কর্মীদের নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে আর দিচ্ছেন হাজারও রকমের প্রতিশ্রুতি। উপজেলার সর্বত্রই জনসাধারণদের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা।
২০২৪ সালে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপিসহ অংশগ্রহণ না থাকলেও ক্ষমতাসীনদের প্রার্থীদের নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই ভোটারদের।
এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল আখতার মোটরসাইকেল প্রতীক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাসুম মুর্শেদ শান্ত ঘোড়া প্রতীক , জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের ভাই রহিম উদ্দিন খান দোয়াত কলম, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রহিম খানের ছেলে শাওন মামুদ খান, কাপ প্রিচ, ছালেহা বেগম আনারস ও ছালেহা বেগমের দেবর সাইফুল ইসলাম হেলিকপ্টর প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবার উপজেলা নির্বাচনে।
তবে এই নির্বাচনে আলোচনা সমালোচনায় সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুই পরিবারের ৪ জন প্রার্থীর অংশগ্রহণ। এর মধ্যে পিতা পুত্র/ দেবর ভাবী নির্বাচনের মাঠ কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওহিদুল ইসলামের সহধর্মিণী সালেহা বেগম আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং একি বাড়িতে বসবাস করা তার দেবর মো. সাইদুল ইসলাম হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের ছোট ভাই মো. রহিম উদ্দিন খান দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। একি বাড়িতে বসবাস করা তার ছেলে শাওন মাহমুদ খান কাপ প্রীচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি রয়েছে ভালোমন্দসহ নানান ধরনের আলোচনা সমালোচনা।
একি বাড়িতে দুইজন প্রার্থী হওয়ার বিষয় নিয়ে প্রার্থীদের সাথে সালেহা বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমি একমাত্র নারী প্রার্থী নারীর অধিকার আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর মিশন ভিশন বাস্তবায়নে আমি প্রার্থী হয়েছি। দেবর মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি এলাকায় মাটি মানুষের সুখে দুঃখে সাথে থাকি তাই ভোট আমাকেই দিবে। আমার ভাবী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সে তো এলাকার থাকে না।
অপরদিকে মো. রহিম উদ্দিন খান জানান, আমি দীর্ঘদিন বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি সমাজে আমার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। রহিম উদ্দিন খানের ছেলে শাওন মাহমুদ খান বলেন, এলাকার যুবসমাজ জেগে উঠেছে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে দুই পরিবারের ৪ প্রার্থীর কণ্ঠেই নমনীয় ও নরম শুর লক্ষ্যণীয় যা ঠান্ডা লড়াই বলে মনে হয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনসার জানান, খোকসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৮ মে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে ৫০টি কেন্দ্রে মোট ৩৪২টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৮ হাজর ৫'শ ২২ জন এবং মহিলা ভোটার ৫৭ হাজার ৪'শ ৮৬ জন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available