রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে কাটা হচ্ছে ফসলি জমি। ফসলি জমি ভরাট করে পাকা স্থাপনা করার কার্যক্রমও চলছে। এতে কমে আসছে ফসলি জমি, পাহাড় কাটায় নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান চালালেও থামানো যাচ্ছে না এসব পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম। বরং দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে পাহাড় খেকো ও মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।
সরেজমিনে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের দক্ষিণে সরকারি আশ্রয়ন পল্লীর কাছে এসবিএম ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটার আশেপাশের পাহাড়গুলো কাটা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। আশেপাশের বিভিন্ন সবজি খেত ও গাছপালাগুলোর পাতায় পাতায় ধুলাবালি জমেছে।
বাবু নামে পাশের ইটভাটার ম্যানেজার এটি কাটার সাথে তারা জড়িত নন জানিয়ে বলেন, ‘এই মাটি দিয়ে ইট হবে না, তাই এসব আমাদের কাটার প্রয়োজনও নাই। রাতের অন্ধকারে অস্ত্রসজ্জিত দুর্বৃত্তরা খননযন্ত্র দিয়ে একাধিক গাড়িযোগে এই পাহাড় কাটছে। তবে তাদের নাম পরিচয় আমরা জানি না।’
এই স্পট থেকে কিছুদূর আগালেই সরফভাটা-শিলক সড়কের সাথেই আরও একটি পাহাড়কে নির্দয়ভাবে কেটে সাবাড় করতে দেখা গেছে।
এদিকে উত্তর রাঙ্গুনিয়ায় ফসলি জমি থেকে টপসয়েল কেটে গভীর খাদে পরিণত করার যেনো প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ইটভাটা মালিকরা। মোগলের হাট খামার পাড়া এলাকায় দিন-দুপুরে প্রকাশ্যেই ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুরে পরিণত করতে দেখা যায়। ইসলামপুর বহেরাতল এলাকাতেও একাধিক কৃষি জমির টপসয়েল কেটে মাটির স্তূপ করে রাখতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, আর্থিকভাবে সাময়িকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ওসমান তালুকদার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, শিলক তৈলাভাংগা বিলেও এমনটা হচ্ছে।
অন্যদিকে মো. আজিজ নামে অপর একজন বলেন, কাপ্তাই সড়কের হরিণগেইট থেকে শুরু করে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান পর্যন্ত ফসলি জমি ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে দোকান ও নতুন দালান করার জন্য।
প্রণব দে নামে একজন জানান, ‘বিল, পুকুর ভরাট, পাহাড় কাটা, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, বর্ষার পানি গতিরোধ করে নিজেদের ইচ্ছে মতো ভরাট, আরও নানা ধরনের পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন যদি কার্যকর না হয়, তাহলে পুলিশ, ইউএনও বা ডিসি এসপি কী করবে।’
এই প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুব বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করেছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থায়ীভাবে কৃষি জমির টপসয়েল এবং পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available