মাহবুব হোসেন মেজর, হাকিমপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা অস্থায়ী মাঠে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে এলাকার তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সদস্যদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের আহত হয় প্রায় ১০ জন। সংঘর্ষের সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৌহিদী জনতা। তবে পুলিশ জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা অস্থায়ী মাঠে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের সাথে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সদস্যদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে বাওনা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে অস্থায়ী মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে টিকিট করে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। উক্ত খেলা বন্ধের দাবিতে তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায়। এসময় হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, হাকিমপুর ঘোড়াঘাট সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার আ.ন ম নিয়ামত উল্লাহ, হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সুজন মিঞা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি দল দুই পক্ষের লোক জনের সাথে কথা বলে পরিবেশ শান্ত করে খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করেন।
এরপর প্রশাসনের লোকজন অস্থায়ী মাঠে গিয়ে আয়োজক কমিটির সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে কয়েকজন যুবক লাঠি নিয়ে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের লোকজনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়। এসময় দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়।
তৌহদী জনতার একজন অভিযোগ করে বলেন, বাওনা গ্রামের যুবসমাজের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে এরমধ্যে এই প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করে। তখন আমরা এই খেলা বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি দেই এবং বিক্ষোভ করি। তারা আমাদের আশ্বাস দেন এই খেলা চলবে না। আজ আবার তারা এই চালু করার জন্য এলাকায় মাইকিং করে এবং মিথ্যা বলে যে ডিসি নাকি অনুমতি দিয়েছেন। আজ আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বলে আপনারা শান্ত হোন, আমরা খেলা বন্ধের ব্যবস্থা করছি। এরমধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আয়োজক কমিটির লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের গালিব, আব্দুর রহমান, রায়হানসহ সাত জন ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় জানান, প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে এখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিছু লোকজন অতর্কিত হামলা চালায় ফলে সেখানে কিছু ব্যক্তি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি এবং তাদের বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা এই খেলার সাথে জড়িত পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সাথে এই মাঠের ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধসহ হাকিমপুর উপজেলায় কোনো মাঠে প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানান তিনি।
হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আ.ন.ম নিয়ামত উল্লাহ জানান, এখানে অনুমতি ছাড়াই প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আয়োজক কমিটির ভালোর জন্য দশ মিনিট সময় দেই এবং তৌহিদী জনতাকে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। আমরা মাঠে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে মাঠের চতুর পাশের কাপড় খোলার ব্যবস্থা করি। এসময় তৌহিদী জনতার লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায় আয়োজক কমিটির কিছু লোকজন। এসময় পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় পুলিশ সেরকম কোন ভূমিকা নিতে পারে নাই। তবে পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available