নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে গেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। ইতিহাসের সাক্ষী হতে রাত থেকেই টানেলে দুই প্রান্তে অপেক্ষা করেছেন অনেক যাত্রী। তবে প্রথম যাত্রী হিসেবে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে পাড় হয়েছে মুন্সিগঞ্জের জুয়েল রানা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার টানেল উদ্বোধন করার পর রোববার ভোর ছয়টা থেকে যান চলাচল শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে যাবেন এই ইচ্ছে থেকে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে বের হয়ে পড়েন মুন্সিগঞ্জের জুয়েল রানা। শনিবার রাত তিনটার সময় তাঁরা চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছে যান। এরপর আজ রোববার ভোর ছয়টার সময় প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি টোল দেন।
ওই গাড়ির চালক মো. শাহেদ বলেন, ‘সারা জীবন গাড়ি চালালাম সেতু আর ফেরি পার হয়ে। এবার নদীর নিচ দিয়ে যাব, খুব উত্তেজনা কাজ করছে।’
শুধু জুয়েল রানা ও শাহেদ নয়, প্রথম টানেলে প্রবেশ করে অনেকেই আনন্দিত।
আনোয়ারা প্রান্তে এরপর সাতকানিয়ার চালক শফিক আলম। তিনি মো. জাকারিয়া নামের যাত্রীকে নিয়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। শফিক আলম বলেন, ‘এত তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাচ্ছি, আশ্চর্যের বিষয়!’
প্রথম যাত্রীবাহী বাস হিসেবে টোল দেয় বিডি বাস লাভার গ্রুপের একটি বাস। তাঁরা বাসটি ফুল ও কাপড় দিয়ে সাজিয়ে নিয়ে টানেলে প্রবেশ করেন।
নিজে গাড়ি চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরী থেকে আনোয়ারায় যাচ্ছিলেন আনিতা মুবাশ্বিরা। তিনি বলেন, ‘অনেক অপেক্ষা করেছি টানেল চালুর জন্য। তাই টানেল পার হওয়ার সময় নিজেকে নিয়ে গর্ব হচ্ছিল বাংলাদেশি হিসেবে। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টানেল আমাদেরই।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উপপ্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ভোর ছয়টার সময় যান চলাচলের জন্য টানেল খুলে দিয়েছি। এখন থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা টানেল চালু থাকবে। তবে গভীর রাতে যান চলাচল কমে গেলে টোলের লেন কমিয়ে আনা হবে। টানেলে ৬০ কিলোমিটার গতি রাখার নির্দেশনা আছে এবং টানেলের ভেতর যেন যানবাহন না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থাপনা আছে বলে তিনি জানান।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। আর শনিবার ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সুড়ঙ্গ নির্মাণে ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং এর ঢাকা সফরে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদি ঋণ হিসাবে দুই শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিয়েছে। বাকি অর্থায়ন বাংলাদেশ সরকার করেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available