যশোর (দক্ষিণ) প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালির ফুল চাষিরা বসন্ত, বিশ্ব ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বাজার ধরতে প্রস্তুত। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন, তাই ফুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। তাদের প্রত্যাশা, এ তিন দিবসে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রয় হবে।
ফুলের সাজে সেজেছে ফুলের রাজ্য গদখালি পানিসারা অঞ্চল। চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠায় মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল। আসন্ন ভালোবাসা দিবস ও মাতৃভাষা দিবসের বাজার ধরতেই এই প্রস্তুতি চাষিদের। ফুলের রাজধানী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা ও এর আশপাশের এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়াজনিত কারণে ফুলের উৎপাদন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আসন্ন বসন্ত, বিশ্ব ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বাজার সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন ফুল চাষিরা। উৎসব পর্যন্ত ফুল ধরে রাখতে, পোকার আক্রমণ ও পচন রোধে নিচ্ছেন পরিচর্যা। চাষিদের দাবি, চাহিদা থাকায় উৎসব এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের দাম বাড়বে এবং তারা লাভবান হবেন।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোরে প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয় এবং এ ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক লোক জড়িত।
ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের পানিসাঁড়া ফুল চাষি সাইফুল কবির বলেন, ভালোবাসা দিবসে রজনীগন্ধা ও ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে গাদা ফুল বিক্রি করবো। এজন্য এখন ফুলের পরিচর্যা করছি। বিশেষ করে, ফুল ধরে রাখতে এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ভিটামিন ও কীটনাশক ব্যবহার করছি। আশা করছি, ভালো দামে ফুল বিক্রি করতে পারবো।’
একই গ্রামের আহম্মদ আলী নামে অপর এক কৃষক বলেন, ‘আমার ২ বিঘা ৪ কাটা গোলাপ বাগান রয়েছে। আমার বাগানের গোলাপগুলো লংস্টিক এবং লাল, সাদা, হলুদ, কমলা ও গোলাপি রঙের। এ ধরনের ফুলের ভালোবাসা দিবসে বেশ চাহিদা থাকে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় উৎপাদন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছে এখন নতুন কুড়ি রয়েছে। এগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ভিটামিন স্প্রে করছি। ভালোবাসা দিবসের আগেই ফুলের দাম বাড়বে। আশা করছি, এক একটি গোলাপের পাইকারি দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে পাব।
একই এলাকার ফুল চাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আসন্ন তিনটি দিবসকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। গোলাপগুলো ক্যাপ পরিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া নানা ধরনের ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে, যাতে ফুল নষ্ট না হয়। এ বছর ফুলের ভালো দাম পাব, এমনটাই আশা করছি।’
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘সারা বছর ফুল বিক্রি করলেও আমাদের মূল ব্যবসা হয় বেশকিছু উৎসব ঘিরে। এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। তবে আসন্ন তিন দিবসকে ঘিরে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’
ঝিকরগাছা কৃষি অফিসার মো. মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, পহেলা ফাল্গুন, স্বরসতী পুজা, ২১ ফেব্রুয়ারি ও বিবাহ অনুষ্ঠান ঘিরে আমাদের অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে আমার আশাবাদী। এ জন্য চাষিরা ফুলের পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available