বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মানোন্নয়ন ও সেবার পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। ১৮ নভেম্বর সোমবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার পরিদর্শন করার সময় শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করেন তিনি।
এসময় শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনেও গ্রন্থাগার খোলা রাখা, বইয়ের সংখ্যা, আসন বৃদ্ধি, সহজতর সেবা প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন দাবি লিখিত ও মৌখিকভাবে তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য বেশ কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনেও গ্রন্থাগার খোলা রাখা, পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থা এবং একাডেমিক বই ছাড়াও বিভিন্ন জ্ঞানমূলক ও সাহিত্যচর্চার বই অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে, একাডেমিক বইয়ের ক্ষেত্রে সর্বশেষ সংস্করণের বই এবং বিষয়ভিত্তিক বইগুলো শিক্ষার্থীদের সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তারা। এছাড়া, সেমিস্টারজুড়ে গ্রন্থাগার থেকে বই সংগ্রহের প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান, কারণ বর্তমানে একাধিক জটিল ধাপ পার হতে হয়। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দলগত পড়াশোনা, অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রেজেন্টেশনের কাজ করার জন্য আলাদা বসার জায়গার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
গ্রন্থাগার পরিদর্শনের সময় উপাচার্যের সাথে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার, দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান বোরহান উদ্দীন, গ্রন্থাগারের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা শেষে গ্রন্থাগারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে আলোচনায় বসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। এসময় কাজের মান বাড়াতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের দাবি জানান তারা। পাশাপাশি, তারা কর্মচারী সংকটসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান বোরহান উদ্দীন বলেন, আমার প্রথম কাজ হলো এই গ্রন্থাগারের সকল পাঠকের সার্বিক সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি দেখা। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। গ্রন্থাগারের ভিতরেই ছেলেদের এবং মেয়েদের নামাজের সুব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ফটোকপি মেশিনের জায়গাটিতে আলাদা সেকশন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি চাহিদা খাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রন্থাগার সংক্রান্ত তাদের সকল দাবি তারা এই খাতায় লিখতে পারবেন। আমি শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব এই চাহিদা খাতাটি যাতে সবসময় চালু রাখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, সপ্তাহে সাতদিন লাইব্রেরি খোলা রাখা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শনিবার সকাল থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত (দুপুরের বিরতি সহ) লাইব্রেরি খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া জায়গা সংকুলানের বিষয়টি নিয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় একাডেমিক বই ও অন্যান্য বই সংযুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদেরকে বলব যে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তারা তাদের পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী বইয়ের তালিকা লাইব্রেরিতে জমা দিয়ে যাবে। সেমিস্টারব্যাপী সময়ে শিক্ষার্থীরা যে বইগুলো নেয় সেখানে আসলে কোর্স শিক্ষকের মাধ্যমে আবেদন, সংশ্লিষ্ট অর্থ জমা দেওয়াসহ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে। এরপরেও তাদের ভোগান্তি কমানোর যতটুকু ব্যবস্থা করা সম্ভব সেটির চেষ্টা করা হবে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, বিনোদন এবং জ্ঞানার্জনের জন্য যে বইগুলো উপকারী সেইসকল বইগুলো বাজেটের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংযুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available