রংপুর ব্যুরো: রংপুর নগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাদ বেড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে অপরাধ। সম্প্রতি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৭নং ওয়ার্ডের চওড়ার হাট এলাকার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গিয়ে এতোপাতারি মারপিট ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
১৩ জুলাই শনিবার সকালে দলবেঁধে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঘাড়ের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয় ও কিলঘুষি মারে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭নং ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। তার ঘাড়ে ১৭টি সেলাইও পরে।
এ ঘটনায় রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করেন আহত ফাহিম মিয়ার পিতা শফিকুল ইসলাম। আহত ফাহিম মিয়া ময়নাকুটি মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণিতে পড়েন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এক দুই ও তিন নং আসামিরা বাংলাদেশ জামাতি ইসলামি সংগঠনের তালিকাভুক্ত সক্রিয় সদস্য।
আসামীরা হলেন- শহিদুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম ও আশরাফ আলী। তাদের সকলের পিতা মৃত আফতাব আলী ও শহিদুলের ছেলে আউয়াল মিয়া। রসিকের ৭নং ওয়ার্ড ময়নাকুটি বেনুঘাট ধনিটারি এলাকায় তাদের বাড়ি।
আহত ফাহিম মিয়ার পিতা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি রসিকের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসরাম। মহাব্বত খাঁ বিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগের একটি কনফারেন্স হয় সেখানে আমরা মিছিল নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলের সাথে দ্বন্দ্ব লাগে। এ বিষয়ে এলাকার সবাই অবগত আছে, এমনি কি থানাকেও জানানো হয়েছে। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে। কিন্তু শনিবার আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায় ঘাড়ের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয় আর বলছে তোর বাপের সাথে যে খেসারতটা ছিল সেটা আজ মিটে দিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। সুষ্ঠু বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। আমার ছেলের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে এটা যেন অন্য কোন সন্তানের সাথে না হয়।
ফাহিম মিয়ার মা কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, আমার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করেন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে ১৭টা সেলাই নিয়ে।
মেডিক্যালের বেডে শুয়ে শুয়ে আহত ফাহিম মিয়া বলেন, রবিউল আউয়ালসহ জলছত্র এলাকার বেশ কয়েকজন ছেলেরা আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। কেউ হাত ধরছে, আবার কেউ মুখ চিপে ধরছে যেন আমি চিল্লাতে না পারি। পরে ভ্যানে করে তুলে নিয়ে গিয়ে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গলায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারলে সেটি আমার ঘাড়ে লাগে ও সেখানে ১৭টা সেলাই দিতে হয়।
ফাহিম আরও বলেন, তারা আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকে আর বলে তোর বাবা আওয়ামী লীগ করে আজ থেকে তোর বাবাও শেষ তোর বাপের আওয়ামী লীগও শেষ দেখি কেমন লাগে। এবার তোকে মারলাম এর পরের টার্গেট তোর বাপ। তোর বাপকে দেখি নিবো। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে আছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
এ বিষয়ে বুধবার ১৭ জুলাই বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার অফিসার ইনচার্জ হারেসুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদেরকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available