নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর এলাকায় সেচ প্রকল্প স্কিমের স্থানান্তর করণে নাটোরের (বিএডিসি) প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে চাহিদা মতো ঘুষ না দেওয়ায় এবং বেশি টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রকৃত কৃষককে সেচ প্রকল্পের স্কীম বরাদ্দ না দিয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলার বরাদ্দকৃত প্রকল্পটি অন্য উপজেলায় স্থাপন করার অভিযোগ উঠেছে।
বিএডিসির সেচ প্রকল্প স্কীম স্থানান্তর বিষয়ে ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির জানান, আহমেদপুর আমার নিজ মৌজায় আমি সেচ প্রকল্প স্কিমের জন্য ২০২০ সালে আবেদন করি এবং আমি এই উপজেলার সর্বপ্রথম আবেদনকারী। আবেদনের পর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সাথে দেখা করি এবং তিনি আমাকে বলেন, আমাদের আন অফিসিয়াল অনেক খরচ আছে, ঊর্ধ্বতন অফিসারদের টাকা দিতে হয়। তিনি কাজ শুরুর পূর্বেই আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন।
পরে আমি এক লক্ষ টাকায় তার প্রস্তাবে রাজি হই এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা প্রদান করতে চাইলে তিনি পরের দিন সন্ধ্যায় আমাকে নাটোরের মাদ্রাসা মোড়ে বিসমিল্লাহ হোটেলে দেখা করতে বলেন। ওই সময় তাকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেই এবং দশ দিন পূর্ণ হলে বাকি ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকে। আমার বাবা অসুস্থ অবস্থায় মেডিকেলে থাকার কারণে টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি প্রচণ্ড রেগে জান এবং বলেন, তোমার প্রকল্প হবে না।
ভুক্তভোগী হুমায়ুন আরও বলেন, পরবর্তীতে তিনি আমার পার্শ্ববর্তী দিয়াড় সাতুরিয়া মৌজায় মামদুদ হোসেনের গভীর নলকূপে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ১৬০০ ফিট পাইপলাইন বরাদ্দ দেন যেন আমার স্কীম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি যেন কোনো ভাবেই প্রকল্প না পাই এজন্য তিনি আহমেদপুরের সেলিম রেজার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নেয় একটি ড্রাগওয়েল করে দেয়ার জন্য। সেখানে ড্রাগ ওয়েল করার মতো পর্যাপ্ত জমিও তার নেই। কিন্তু আমার স্কীম ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য তিনি বিভিন্ন সময় মামদুদ হোসেন, সেলিম রেজাকে দিয়ে আমার স্কিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে আসছে যা এখন পর্যন্ত চলমান।
নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন আমাদের আহমেদপুর পশ্চিমপাড়া এলএলপি সেচ প্রকল্পটি না হওয়ার জন্য অদ্যাবধি তাণ্ডব চালাচ্ছেন। ওই নির্বাহী প্রকৌশলীর ঘুষের চাহিদা মিটাতে না পারায় ও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় আজও আমাদের ভাগ্যে এলএলপি সেচ স্কীম জুটেনি। ২০২০ সালে পার্টিসিপেশন ফি জমা দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত হয়রানি হতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় ওই নির্বাহী প্রকৌশলী টাকার বিনিময়ে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে নাটোর সদর উপজেলা থেকে শরিফুল ইসলাম ও বাগাতিপাড়া উপজেলা থেকে বাবুল হোসেনকে ১.৫ কিউসেক এলএলপি সেচ প্রকল্প বড়াইগ্রাম বড়াইগ্রাম উপজেলায় আটঘড়ি মৌজায় বরাদ্দ দেন, যা সম্পূর্ণ সেচ নীতিমালা বিরোধী।
এ বিষয়ে আমি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ( বিএডিসি) চেয়ারম্যান বরাবর ২৪ সালের ১০ মার্চ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। বড়াইগ্রাম উপজেলায় সেচ কমিটির অনুমোদন ব্যতীত কীভাবে অন্য উপজেলা হতে সেচযন্ত্র স্থাপন করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়।
অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর বিএডিসির প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেনে জানান, অভিযোগকারী হুমায়নের বিরুদ্ধে মামলা জটিলতার কারণে সেচ প্রকল্প স্কিমের স্থানান্তর কার্যক্রম সম্ভব হয়নি, উক্ত বিষয়টি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ( বিএডিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত রয়েছেন। তিনি আরও জানান, আমার বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available