নিজস্ব প্রতিনিধি: হামলার শিকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিক্যালের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাড়পত্র (ডিসচার্জ) দেয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক শিশির চক্রবর্ত্রী বলেন, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিক এখন সুস্থ। তিনি এখন অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন। সেজন্য তার সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সব প্রস্তুতি শেষে তাকে বিকালের মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও জানান, মূলত শামসুদ্দিন মানিকের হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করেছিলেন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছিল।
তবে সিলেট ওসমানী মেডিক্যালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা আমাকে জানায়নি। তবে গত দুদিন আগে সাবেক বিচারপতি মানিককে বৃহস্পতিবার ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে আমাকে বলা হয়েছিল।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, হাসপাতাল থেকে সাবেক বিচারপতি মানিককে আজ বৃহস্পতিবার ছাড়পত্র দেওয়ার তথ্য আমাদের কাছে নেই। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাকে কোথায় নেওয়া হবে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে তাকে হাসপাতাল থেকে সরাসরি সিলেট কারাগারে নিয়ে আসা হবে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন (কারা হাসপাতাল) ডা. মো. ইনামুল হক চৌধুরি স্বাক্ষরিত স্মারকপত্রে বলা হয়েছে, কয়েদি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিককে (৭৪) ইনজুরি আউটসাইড অবস্থায় সতর্কতার সঙ্গে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে সুপারিশ করা হয়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে কারা সূত্র জানায়, ঢাকার আদাবর থানায় পোশাকশ্রমিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিককে শুনানির দিন ৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছিলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও শারীরিক অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় মেডিক্যাল বোর্ড তাকে ছাড়পত্র দেয়নি। এ ছাড়া বুধবার ২৮ আগস্ট তাকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই কেবিনটি প্রিজন সেল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
জানা যায়, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ২৩ আগস্ট রাত ১১টার দিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিককে একটি জঙ্গল থেকে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সহায়তায় আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরদিন শনিবার ২৪ আগস্ট সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে ওই দিন বিকালে আদালতে হাজির করলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগির হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, আদালতে প্রবেশের সময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী ও আইনজীবী শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিককে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারেন। অনেকে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি জুতাও নিক্ষেপ করেন। কেউ কেউ শামসুদ্দিন চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে কটূক্তিমূলক স্লোগানও দেন এবং লাঞ্ছিত করেন। সেখান থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available