নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিনরাত জ্বলছে একাধিক বৈদ্যুতিক বাতি। প্রতিষ্ঠান খোলা থাক বা বন্ধ কখনোই নেভানো হয় না বাতিগুলো। তারপরও নির্বিকার প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিদিনই অপচয় হচ্ছে বিদ্যুৎ। যার বিল পরিশোধ করা হচ্ছে সরকারি অর্থে।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে এক সপ্তাহ ধরে পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। দেখা যায়, শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকায় রহমতুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন দ্বিতল ভবনের সামনে লাগানো একটি বৈদ্যুতিক বাতি এবং পাশের পুরাতন একতলা ভবনের বারান্দায় আরেকটি বাতি দিনরাত জ্বলছে। মূলত, এই দুটি বাতি রাতে জ্বালানোর জন্য লাগানো হয়েছে।
সকাল দুপুর রাত যখনই যাওয়া হয় তখনই বাতি দুটি প্রজ্বলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অথচ প্রধান গেটসহ ভবনের কেঁচি গেট ও কক্ষগুলো তালাবদ্ধ। দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকেই বিদ্যালয় চত্বরে কখনোই পাওয়া যায়নি। আশপাশের লোকজন বলেন, দিনের পর দিন এভাবে বিদ্যুৎ অপচয় করা হচ্ছে। কিন্তু কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। বার বার বলা হলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। স্কুল ছুটি থাকলে কেউ আসে না। ফলে দিন রাত জ্বলে বাতিগুলো।
সর্বশেষ ২৭ মার্চ বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় গিয়েও একই দৃশ্য চোখে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রের মোবাইলে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে প্রধান শিক্ষক হাফিজা খাতুনকে মোবাইল করা হলে তিনি সবসময় বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে থাকার বিষয় স্বীকার করে বলেন, অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রকে অনেকবার বললেও গায়ে লাগায়নি।
এরপর বেলা ২টার দিকে অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রের মোবাইলে আবার কল দিলে এবার রিসিভ করে তিনি বলেন, আজ আমি একটু দেরি করে এসেছি তাই বাতি জ্বালানো পেয়েছেন। খবর পেয়ে এইমাত্র বাতি বন্ধ করেছি। এসময় মাধবকে মিথ্যা বলছেন বলে সতর্ক করে পুরো এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করার বিষয় জানালে এবং প্রতিদিনই সকাল দুপুর রাত সবসময় বাতি জ্বলা অবস্থায় দেখেছি বলার পর এর দায় স্বীকার করে বলেন, এখন থেকে আর এমন অবহেলা হবে না।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বলেন, আমি নিজেও অনেক দিন দেখেছি দিনের বেলায়ও বাতি জ্বলছে। মোবাইল করে সতর্ক করলেও কেউ কথা শোনে না। নৈশ প্রহরী বা দারোয়ান না থাকায় এমন হয়েছে। অফিস সহায়ক হিসেবে যে রয়েছে সে এই দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক। কারণ তারা হাইকোর্টের একটি রিটের প্রেক্ষিতে নিজেদের ডিউটি ৮ ঘণ্টার বেশি করবে না বলে জানান।
তিনি বলেন, দুই একটা বাতি এভাবে জ্বললে তেমন বিল হয় না। তাই বিদ্যুৎ বিলে কোনো অসামঞ্জস্যও পাইনি। তারপরও যেহেতু আপনারা অভিযোগ করছেন প্রধান শিক্ষককে জানাচ্ছি, যেন বাতি নেভানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই যে দায়িত্বে অবহেলা করে বিদ্যুতের অপচয় করা হচ্ছে এবিষয়ে আপনার কি করণীয় কিছু নাই? এমন প্রশ্নে তিনি নিরবতা পালন করেন এবং সদুত্তর না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে মুঠোফোনে সতর্ক করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available