নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকার বহুমুখী ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন আমরা বহুমুখী করছি। ৪১ সালের মধ্যে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রকৌশলীদের গবেষণা দরকার।
দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে গণমূখী, পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী, উপযুক্ত ও টেকসই কৌশল এবং পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নকে দ্রুততর করতে আলোচনার মাধ্যমে কৌশল ঠিক করুন যাতে আমরা দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
১১ মে শনিবার সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবির) ৬১তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, আপনারা নিজেরাই জানেন ৯৬ সালের দেশের কী অবস্থা ছিল। বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। মাত্র ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া যেত। ৪৬০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করে যাই। তারপর দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতা আসি তখন কী ছিল? সেই ৪৬০০ থেকে কমে গিয়েছিল। সেই থেকে যাত্রা শুরু করে আজকে আমরা ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, হাওর এলাকায় মাটি ভরাট করে আর কোনো রাস্তা হবে না। নিদের্শ দিয়েছি, যেন পানির স্রোত অব্যাহত থাকে। বন্যার সময় অনেক রাস্তা ভেঙে যায়। যেখানে ভেঙে যাবে সেখানে মাটি ভরাট করতে দেই না। সেখানে ব্রিজ বা কালভার্ট করে দিয়েছি। কারণ আবার যদি বন্যা হয়, তাহলে আবারও ভাঙবে, সেই বিষয়গুলো মাথা রেখে পরিকল্পনা করতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রাস্তা বানাতে কম খরচ, বাংলাদেশ বেশি খরচ হয় কেন? যারা বলেন, আমার মনে হয় তাদের বাংলাদেশের মাটি সম্পর্কে ধারণা নেই। কারণ, আমাদের মাটি তো নরম মাটি। যেটাকে বলে দোআঁশ মাটি। টেকসই কিছু করতে গেলে আগে আমাদের মাটিটা তৈরি করতে হয়। মাটিকে যথাযথভাবে তৈরি করতে পারলে তাহলে সেটাই টেকসই হয়।
জলাধার যাতে নষ্ট না হয় সেভাবেই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি দেখেছি একটা সুন্দর বড় পুকুর, তার ভেতরে বিল্ডিং বানানের প্ল্যান নিয়ে আপনারা হাজির হন। আমি আসার পর যে কয়টা এসেছে, আমি বাতিল করে দিয়েছি। আমি আসার আগেই এই ঢাকা শহরে অনেক পুকুর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ওই এলাকার যত পানি সেটা যাবে কোথায়?
তিনি আরও বলেন, পান্থপথ ছিল একটা বিল। পুরো বর্ষাকালে সেখানে পানি জমতো। ওখানে একটা খাল ছিল। বক্স কালভার্ট করার কারণে বৃষ্টির পানি জমে যায়। সেই পানি নিষ্কাশনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিতে হলো। আমাদের দেশের জন্য এটা (বক্স কালভার্ট) প্রযোজ্য না। আমি মনে করি আমাদের উন্মুক্ত খাল থাকবে। দরকার হলে আমরা সেখানে এলিভেটেড রাস্তা করবো। নিচে খাল, উপরে রাস্তা।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের উন্নত জীবনমানের কথা মাথায় রেখেই কাজ করছে সরকার। কিন্তু একটি গোষ্ঠী আছে তাদের কিছুই ভালো লাগে না। পদ্মা সেতুতে রেল, মেট্রোরেল, স্যাটেলাইট, পারমাণবিক বিদ্যুৎ এসব নিয়ে সমালোচনা করছে তারা।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইবির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু। এবারের কনভেনশনের মূল প্রতিপাদ্য ‘ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’। এ কনভেনশনের মূল আকর্ষণ ‘দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স ফর ট্রান্সফরমিং টেকনোলজি ড্রাইভেন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available