অমৃত রায়, জবি প্রতিনিধি: গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার জন্য ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
১৯ জানুয়ারি শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এক জরুরি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জবিশিস শিক্ষকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা রক্ষা, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা, ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সূত্রিতা কমিয়ে সেশনজটমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের হয়রানি রোধের জন্য ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
সভা থেকে উত্থাপিত শর্তসমূহ হলো:
১. মহামান্য রাষ্ট্রপতির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আগামী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এনটিএ গঠনের মাধ্যমে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে।
২. ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির সকল প্রক্রিয়া শেষ করে সকল পাবলিক বিশদ্যালয়ের ক্লাশ একই দিনে অর্থাৎ ১ জুলাই ২০২৪ এর মধ্যে শুরু করতে হবে।
৩.পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত স্কোর ও মেধাক্রম প্রকাশ করতে হবে। একইসাথে ভর্তি প্রক্রিয়র দীর্ঘসূত্রিতা ও মাইগ্রেশন জটিলতা নিরসন করে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
৪. আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষদের সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি নিরীক্ষা টিম গঠন করে ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আয় ও ব্যয়ের নিরীক্ষা কার্য সম্পন্ন করে অংশগ্রহণকারী সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট প্রকাশ করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতোপূর্বে পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিতে হবে।
৫. দেশের সকল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলদা আলাদা গুচ্ছ করতে হবে।
৬. ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা পূর্ণ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা সমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভর্তি পূর্ণ করতে হবে।
৭. ভর্তির আবেদন ফি কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে।
৮. ভর্তি আবেদন ফি ব্যতীত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন, মাইগ্রেশন, ভর্তি বাতিল বা অন্য কোনো কারণে অর্থ প্রদান করবে না তা নিশ্চিত করতে হবে।
৯. গুচ্ছ ভুক্ত ২২টির মধ্যে আসন সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ না করে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক আবেদনের সংখ্যা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে হবে।
১০. পরীক্ষা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য এবং এর স্বচ্ছতার জন্য একটি সুস্পষ্ট আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা শিক্ষক সমিতি কখনোই গুচ্ছের পক্ষে না। আমরা গুচ্ছে যেতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বতন্ত্র আইন দিয়েও ইউজিসি বারবার গুচ্ছ চাপিয়ে যাচ্ছে। ইউজিসি উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র পরীক্ষায় আমরা এবার যেতে না পারলেও গুচ্ছের মূল লক্ষ্য আর স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আমাদের শর্তগুলো মানার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বিজয়ে ঈর্ষান্বিত হয়েই কিছু মহল বারবার অস্বচ্ছ ও অদক্ষদের পরিচালনায় গুচ্ছ পরীক্ষা চাপিয়ে দিচ্ছে আমাদের উপর। আমরা চাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল রাখতে স্বতন্ত্র ভর্তি প্রক্রিয়ায় ফেরত আসতে। যদি এবার গুচ্ছতে থাকতেই হয় তবে আমাদের শর্তসমূহ পূরণ করে স্বচ্ছতার সাথে গুচ্ছ ভর্তি পরিচালিত হোক।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available