• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৩:১১:৪৪ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৩:১১:৪৪ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

আন্তর্জাতিক

হিজবুল্লাহর কয়েক হাজার যোগাযোগ ডিভাইস একই সঙ্গে বিস্ফোরিত, নিহত ৯, আহত ২৭৫০

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ০৭:৪২:৩৭

হিজবুল্লাহর কয়েক হাজার যোগাযোগ ডিভাইস একই সঙ্গে বিস্ফোরিত, নিহত ৯, আহত ২৭৫০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের যোগাযোগর জন্য ব্যবহৃত কয়েক হাজার পেজার প্রায় একই সময়ে বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে হিজবুল্লাহর এক প্রণেতার ছেলে ও এক কিশোরীসহ অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৭৫০ জন।

এর মধ্যে ২০০ জনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের রাজধানী বৈরুত ও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিজেদের যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ। তবে ইসরাইল এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

পেজারকে বিপার বা ব্লিপারও বলা হয়। এটি মূলত একটি বেতার যোগাযোগ যন্ত্র যার মাধ্যমে অডিও বার্তা গ্রহণ ও প্রেরণ করা যায়। যন্ত্রটি আকারে ছোট, যা সাধারণত মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহার শুরুর হওয়ার আগে ব্যবহৃত হতো। তবে এখনও বহু দেশে এর ব্যবহার রয়েছে।

যন্ত্রগুলো ব্যবহারকারীর জন্য একটি ছোট পাঠ্য বার্তা প্রদর্শন করে। যে বার্তা একটি কেন্দ্রীয় অপারেটরের মাধ্যমে টেলিফোনের সাহায্যে রিলে বা পাঠানো হয়। পেজার রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে কাজ করে। অপারেটর রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে বার্তা পাঠায়।

পেজারগুলোতে বিশেষ মৌলিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে এগুলো ট্র্যাক বা নজরদারি করা কঠিন। এ কারণে হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠীগুলোর কাছে যন্ত্রটি বেশ জনপ্রিয়।



১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে প্রথম পেজার বিস্ফোরণটি ঘটে। এরপর সিরিজ বিস্ফোরণ শুরু হয়, যা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে। অনেকটা বোমার মতো প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ফলে হতাহতের ঘটে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হতাহতের খবর ও সংখ্যা এখনও জানা যাচ্ছে।

নিহতদের মধ্যে আট বছর বয়সী এক মেয়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া লেবানন পার্লামেন্টে হিজবুল্লাহর এমপি আলী আম্মারের ছেলে মোহাম্মদ মাহদি আম্মারও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। হিজবুল্লাহ নিশ্চিত করেছে, তাদের দুই যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আল আবিয়াদ জানিয়েছেন, প্রায় ২ হাজার ৭৫০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০০-রও বেশি জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের বেশিরভাগই মুখ, হাত ও পেটে আঘাতের খবর পাওয়া গেছে। লেবাননে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোজতবা আমানিও পেজার বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন।

পেজার বিস্ফোরণকে হামলা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। আর এই হামলার জন্য হিজবুল্লাহসহ লেবাননের অনেকেই ইসরাইলের দিকে আঙুল তুলছেন। গাজা সংঘাত শুরুর একদিন পর অর্থাৎ গত ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর সংঘাত শুরু। উভয় পক্ষ সীমান্তে নিয়মিত হামলা পাল্টা হামলা চালিয়ে আসছে।

দুই পক্ষের প্রচণ্ড হামলার কারণে প্রায় ৬০ হাজার ইসরাইলি নাগরিককে সীমান্ত থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। সম্প্রতি হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে হটিয়ে উদ্বাস্তু ইসরাইলিদের তাদের আবাসস্থানে ফেরাতে দেশটির রাজনীতিক ও গণমাধ্যম ক্রমবর্ধমানভাবে লেবাননের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের কথা বলছে।

এর মধ্যেই মঙ্গলবার লেবাননে হিজবুল্লাহর যোগাযোগ নেটওয়ার্কে হামলার ঘটনা ঘটল। ঘটনার পর হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে সরাসরি বলেছে, ‘এই অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য আমরা সম্পূর্ণরূপে ইসরাইলকে দায়ী করছি। ইসরাইল ‘অবশ্যই তার এই পাপপূর্ণ আগ্রাসনের জন্য ন্যায্য শাস্তি পাবে।’
 


একইভাবে লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারিও ইসরাইলের নিন্দা জানিয়েছেন। তবে ইসরাইল পূর্বের মতো মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। 

কীভাবে একসঙ্গে এতগুলো পেজার বিস্ফোরিত হল তা এখনও অজানা। তবে এ নিয়ে অনেকেই নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সমীকরণ সামনে আনছেন। কেউ কেউ অনুমান করছেন, রেডিও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, যে রেডিও নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে পেজারগুলো চলে।

তারা বলছেন, পেজারগুলো হ্যাক করা হয়। যার ফলে এর সিস্টেমটি এমন একটি সংকেত নির্গত করে যা পেজারগুলোর মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে বিস্ফোরণ ঘটায়। কিছু গণমাধ্যম বলছে, ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ অত্যন্ত সূক্ষ্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

স্কাই নিউজ অ্যারাবিয়া জানিয়েছে, যেসব পেজারে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেগুলো মাত্র পাঁচ মাস আগে লেবাননে এসেছে। লেবাননে যাওয়ার আগে এ যন্ত্রগুলো মোসাদের হাতে আসে। তারা যন্ত্রগুলোর ব্যাটারির মধ্যে অত্যন্ত উচ্চ বিস্ফোরক পিইটিএন স্থাপন করে। এরপর এগুলো লেবাননে পাঠানো হয়।

মাত্র পাঁচ মাস পর দূর থেকে ব্যাটারির তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে ডিভাইসগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো। হিজবুল্লাহর কয়েকজন যোদ্ধার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বিস্ফোরণের আগে পেজারগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপরই সেগুলো বিস্ফোরিত হয়।

লেবানের একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, যন্ত্রগুলোতে যে বিস্ফোরক স্থাপন করা হয়েছে সেগুলোর ওজন ২০ গ্রামের মতো। আর যেসব পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে সেগুলো পাঁচ মাস আগে লেবাননে যায়। দূর থেকে কীভাবে এসব যন্ত্রে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো সেটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ