বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোংলায় ভারী বর্ষণে শহরের বেশিরভাগ এলাকা ও প্রধান প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব এলাকার মানুষ। জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন অঞ্চলের মানুষ।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আজ রোববার পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মোংলা শহরের পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় ভোগান্তিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ।
রোববার বেলা ১১টার দিকে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, মোংলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এক ফুটের বেশি পানি রয়েছে পৌরসভার রাস্তায়। অনেকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। পানিবন্দি পরিবারগুলো এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পেটের টানে রাস্তায় বের হওয়া ইজিভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। যাত্রী না থাকায় তেমন আয় নেই তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃষ্টির পানিতে বাগেরহাট সদর, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, কচুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে অনেকের পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে সোহাগ খান নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, চারজনের সংসার চলে আমার ওপর। তাই তো সকালে বৃষ্টির মধ্যে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু লোকজন নেই। ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ১০০ টাকা হয়েছে কি না তা বলতে পারবো না। কি আর করা, একে তো বৃষ্টি তার ওপর রাস্তাগুলো পানিতে প্লাবিত হচ্ছে, মানুষ বের হয়ে কোথায় যাবে?
তিনি আরও বলেন, শহরের রাস্তাগুলো ভাঙা, এরই মধ্যে লাগাতার বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই শহরের অধিকাংশ রাস্তায় জমে থাকে পানি। যাত্রী পাওয়া যায় না। ইনকাম করতে কষ্ট হয়। এতে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
মোংলার জয়মনি এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া নামের এক নারী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মেঝেতে পানি উঠে যায়। আমাদের এখানকার ৬টি পরিবারের একই অবস্থা। বৃষ্টি ও নদীর পানি না কমা পর্যন্ত আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব না।
উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের অচিন্ত চৌধুরী নামের এক মৎস্য চাষি বলেন, আমাদের মৎস্য ঘেরে জোয়ারের পানিতে বড় কোন প্রভাব ফেলতে না পারলেও, বৃষ্টির পানিতে ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বেরি তলিয়ে ঘেরের চিংড়ি মাছসহ সকল প্রকার মাছ বের হয়ে গেছে। এই ভারী বৃষ্টির পানিতে অনেকেরই ঘের তলিয়ে গেছে। কারও কারও ঘেরের বেরি ভেঙ্গে গেছে। আমার নিজের ঘেরও তলিয়ে গেছে। এখনো নদী-খালে পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় বৃষ্টির পানি মাঠ থেকে নামতে পারেনি, সবগুলো ঘের ডুবে রয়েছে বা যাচ্ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available