নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের চলমান রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পরিস্থিতিতে শিল্প-কারখানার পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি নিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের সঙ্গে দেখা করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ব্যবসায়ী নেতারা। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ সেনা সদর ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে বিনিয়োগে আস্থা ফিরে পায়, সেদিকে নজর দিতে সেনাবাহিনী প্রধানকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সভায় সেনাবাহিনী প্রধান ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে শিল্পকারখানা ও শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়া চাঁদাবাজি বন্ধ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে সেনাবাহিনী পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির হোসেন, এ কে আজাদ, জসিম উদ্দিন, তপন চৌধুরী, আশরাফ আহমেদ, খন্দকার রফিকুল ইসলাম ও নাসের এজাজ বিজয় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ব্যবসায়ীরা সব বন্দর ও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়া অর্থনীতিতে গতি আনতে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করা, আমদানি-রপ্তানিসহ নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করার ওপর তাগিদ দেওয়া হয়।
সভার শুরুতে সেনাবাহিনী প্রধান তার বক্তব্যে দেশের অর্থনীতিতে ব্যবসায়ীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন। পাশাপাশি শিল্পকারখানা চালু রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনী প্রধান ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন।
এরপর এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে সেনাবাহিনীর সময়োচিত ভূমিকার প্রশংসা করেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পকারখানায় উৎপাদন অক্ষুণ্ন রাখাসহ আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সেই সঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি শিল্পকারখানা ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তাসংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ নিরসনের ব্যবস্থা, অগ্নিসংযোগের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা পুনরায় চালু করা এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা সেল গঠন করা হয়। এই নিরাপত্তা সেলের তত্ত্বাবধানে শিল্প পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সহায়তায় অতি দ্রুত সাময়িক বন্ধ থাকা কারখানাগুলো আবার চালু হয় এবং আস্থার ও নিরাপদ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তাকল্পে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available