রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের বিশেষ ভিজিএফ চালের স্লিপ বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নে।
জানা যায়, বন্দবেড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালামের নেতৃত্বে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের দিয়ে ও স্থানীয় মো. মোনির হোসেন, ইমরান মিয়া, জায়দুল ইসলাম, মোন্তাজুল হকসহ আরও অনেকে মিলে ৫০টি স্লিপের ৫শ’ কেজি চাল তুলে। পরে এসব চাল পাখিউড়া ব্রিজ মোড় এলাকার মো. ইসাহক নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করা হয়। চাল উত্তোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে দুজন তাদের ২টি স্লিপের ২০ কেজি চাল ৩০ টাকা কেজি দরে বাইরের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি দেয়। এর ফলে তাদের কাছ জরিমানা স্বরূপ প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে দাম আদায় করে ইউপি সদস্যের প্রতিনিধি সোহেল আহমেদ (মনির)।
বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ছাত্রলীগের সদস্যরা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের শান্ত করেন। এ ঘটনাটি নিয়ে গত ৩ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউপি সদস্য আবুল কালম বাধা দেওয়া সেই ছাত্রলীগ সদস্যদেরকে তার বাড়িতে ডাকেন এবং তিনি কিছু লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে তাদের অপমান ও হুমকি প্রদান করেন। এ বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সোহেল রানা ও রনি আহমেদ বলেন, ‘ইউপি সদস্য আবুল কালাম ভিজিএফের ৫০টি স্লিপের চাল বিক্রি করে পাখিউড়া ব্রিজের ব্যবসায়ী ইসাহকের কাছে। এ সময় ছাত্রলীগের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ইউপি সদস্যের লোকজন। পরে আমরা কয়েকজন গিয়ে তাদেরকে শান্ত করি।’
ছাত্র লীগের সদস্য নাছিমুল ইমাম বলেন, ‘বুধবার বন্দবেড় ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ডে ভিজিএফের চাল বিতারণ করা হয়। কিন্তু সেখানে গরিব মানুষদের বাদ দিয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের দিয়ে তুলে কালাম মেম্বর এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫০টি স্লিপের চাল বিক্রয় করে। দু’জন ছাত্র অন্যত্র চাল বিক্রয় করায় তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করে। আমরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে ইউপি সদস্য ও তার লোকজন আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে ৩ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউপি সদস্য আবুল কালাম বাড়িতে ডেকে নিয়ে আমাদের অপমান করেন এবং তার কিছু লাঠিয়াল দিয়ে হুমকি প্রদান করেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
চাল ব্যাবসায়ী ইসাহক বলেন, ‘মনির হোসেন, ইমরান মিয়া, জায়দুল ইসলাম, মোন্তাজুল হক ভ্যান গাড়িতে করে চাল আনছে। তারা আমাকে এখনো চাল দেয় নাই। তবে দু’জন এসে আমার চাল মাপার মিটার নিয়ে গেছে। সেই মিটার দিয়ে তারা চাল মাপতেছে। এখন তারা আমারে চাল দিবো না অন্য কোথাও বিক্রয় করবে, আমি জানি না। তবে তারা চাল আনছে, আমি দেখছি।’
৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, ‘আমি ভিজিএফের স্লিপের চাল বিক্রয় করি নাই এবং আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে এবার ভিজিএফের নামের তালিকায় ছাত্রদের নাম রয়েছে। তারা বিক্রয় করলে আমি কি করমু, যার চাল সেই বিক্রয় করতেছে। এখানে আমার কিছুই করার নাই।’
বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, ‘যার স্লিপ আমি তাকেই চাল দেই। স্লিপ ছাড়া কোনো চাল দেই না। আমার ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আবুল কালাম যে ভিজিএফের চাল বিক্রি করেছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে খোঁজ-খবর নিতেছি।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available