শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়িতে দুদফা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ইটপাটকেল ছুঁড়েছে। শতাধিক মানুষ এসে বাড়ির মূল ফটকে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। মহান স্বাধীনতার দিবসে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। চলছে সমালোচনা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
২৬ মার্চ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন মৃধার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের স্কুল শিক্ষক আরিফ, রুহুল আমিন রনি, মোবারকের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিনের ছেলে স্কুল শিক্ষক লুৎফুর রহমান ফরহা বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা আরিফ রুহুল আমিন রনি, মোবারকসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদিরের জমি জবরদখল করে মসজিদ নির্মাণ করছে। একটি মসজিদের ১০০ গজ দূরে আরেকটি মসজিদ করছে। এ নিয়ে কয়েকদিন যাবৎ ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছে। মঙ্গলবার মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে বের হওয়ার পর নয়া দিগন্তের এক সাংবাদিক আমার কাছে জমির মালিকানার বিষয়ে জানতে চায়। এরপর আমি বক্তব্য দেই। সঠিক সাক্ষী দেয়ার কারণে আমার বাবার বাড়িতে হামলা করে আমাকে জীবনে মেরে ফেলার জন্য। তখন আমি উপজেলা পরিষদে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। বাবার পক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমার স্ত্রী ভিডিও কলে বিষয়টি জানানোর পরপরই ইউএনও স্যার ও ওসিকে বিষয়টি অবহিত করি। প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত দেখি।
অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক আরিফ হোসেনের বক্তব্য নিতে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেনি।
প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মলিনা আক্তার বলেন, বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে স্কুল শিক্ষক আরিফের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন গালাগাল করতে করতে আমার বাড়ির দিকে আসতে থাকে। এরপর হইচই শুনে আমার পুত্রবধূ মাহমুদা আক্তার ইতি বাড়ির গেট বন্ধ করে দেয়। ওরা দৌড়াদৌড়ি করে এসে বাড়ির দক্ষিণ পাশের গেট ভাঙচুর করে। এরপর পূর্বপাশের গেট ভাঙচুর করে। বাড়ির পাশের একটি রান্নাঘর ভাঙচুর করে। বাড়ির প্রধান ফটক ভেঙে বাড়ির ভেতর প্রবেশের চেষ্টা করে। এরপর অনেক ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে বসতবাড়ির ভেতর। আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতা দিবসে আমার বাড়িতে হামলা ভাঙচুর খুবই কষ্ট পেয়েছি। ওরা আমার ছেলেকে বার বার খোঁজার চেষ্টা করে। তাকে মেরে নাকি পঙ্গু করে বসিয়ে রাখবে। এটা অনেক ভয়ের কথা। ভাগ্য ভালো এসময় আমার স্কুল শিক্ষক ছেলে উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছিল।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, শুনছি একটি মসজিদ নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সজীব আহমেদ বলেন, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলার প্রশাসনের লোকজনকেও পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available