রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে খামারীরা ভাসমান খাঁচায় করেছেন বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ। ভাসমান মাছ চাষে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে প্রায় দুইশত পরিবারের। এ চাষের মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে স্বাদ অনেক বেশি এবং দামও পাওয়া যায় তুলনামূলকভাবে বেশি। তেলাপিয়া, কই, শিং, পাবদাসহ বিভিন্ন মাছ চাষ হচ্ছে এ খাঁচাগুলোতে। এক একটি তেলাপিয়ার ওজন হয় এক থেকে দেড় কেজি। ওজনে বাড়ে বলে অধিক দাম পেয়ে অনেকে বয়ে এনেছেন পারিবারিকভাবে আর্থিক স্বচ্ছলতা।
সরেজমিনে গিয়ে খামার ঘুরে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরায় অপার সম্ভাবনা নিয়ে ২০১০ সাল থেকে খাঁচায় ভাসমানভাবে মাছ চাষের যাত্রা শুরু করেছিলেন উপজেলার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের মেঘনার পাড়ের হাজী কামলা হোসেন নামে এক ব্যক্তি। প্রথমে মেঘনা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের উদ্যোগী হন তিনি। পরে তার চাষের এ পদ্ধতিতে লাভজনক দেখে গ্রামের অন্যান্য খামারীরা উদ্যোগী হন এ পদ্ধতিতে মেঘনায় মাছ করতে। এখন সরকারিভাবে নিবন্ধ নিয়ে প্রায় ৩৫ জন খামারীর প্রায় তিন হাজার খাঁচা হয়েছে।
এছাড়া আরও অনেকেই মাছ চাষ করছেন যারা সরকারিভাবে নিবন্ধন করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন শতাধিক খামারী রয়েছেন যারা সরাসরি খাঁচায় ভাসমান মাছ চাষ করছেন। প্রতিদিন এ খাঁচা থেকে মাছ বিক্রি হচ্ছে কয়েক হাজার মেট্রিকটন। যা স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে নরসিংদী জেলার অন্যান্য উপজেলার বাজারগুলোতে ও বিক্রি হয়। এ মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে বাড়ে বেশি,স্বাদও অনেক। বাজারের পুকুরে মাছের চেয়ে দাম ও পাওয়া যায় অনেক বেশি। ফলে অনেক পরিবারে আসছে আর্থিক সফলতা।
এ ব্যাপারে সফল মাছ চাষি মো. মুছা মিয়া জানান, প্রথমে তার বাবা কামলা হোসেন এ উপজেলার চর আড়ালিয়ার মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। এর পর থেকে এ মাছ চাষে বাবার এ পেশা তিনি ধরে রেখেছেন। তার আড়াইশ খাঁচা থেকে সপ্তাহে তিন চারদিন মাছ বিক্রি করতে পারেন। তিন থেকে চার মেট্রিকটন মাছ বিক্রি করে তিনি তার সংসারে সফলতা ফিরে এনেছেন। তার দেখাদেখি এলকায় অনেকেই এ ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
এমন একজন আগ্রহী ব্যক্তি রয়েছেন যার নাম ভিকচান মেম্বার। তিনি বাবার মাছ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে এখন সফল খামারী। তার মতো আরও শতাধিক খামারী রয়েছেন। তবে নদীর পানি দূষণে অনেক সময় মাছ মরে গিয়ে ভেসে উঠে। ফলে গুণতে হয় লোকসানের ঘানি। নদী দূষণ থেকে এবং নদীর নাব্যতা ফিরে পেতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্ঠি কামানা করেন তিনি।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাবিব ফরহাদ আলম জানান, নদীতে ভাসমান মাছ চাষে খামারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আরও যারা নদীতে ভাসমান মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হবেন তাদেরও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available