অভি হাসান দেওয়ান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে স্ত্রী এবং তার পরকীয়া প্রেমিকের চক্রান্তে এক প্রবাসীকে মাদক মামলায় ফাসাঁনোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করে গত ১৫ অক্টোবর রোববার পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগীর সমর্থনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের গণস্বাক্ষর এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে । অভিযুক্তের নাম মো. শান্ত, সে উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের দুর্লভদী এলাকার মো. গোলাপ মিয়ার ছেলে। ৯ অক্টোবর সোমবার সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের কাওনান মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্ত মিয়া সৌদি আরব থাকাকালীন তার স্ত্রী তিশা স্থানীয় মোজাফ্ফর মোল্লার সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শান্তর পরিবার জানতে পেরে তিশাকে শাসন করলে সে শান্তর পাঠানো তার একাউন্টে থাকা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে মোজাফ্ফরের কাছে চলে যায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে শান্ত।
পরে এর জেরে শান্তকে শিক্ষা দিতে পরিকল্পনা করে তিশা ও মোজাফ্ফর। তারা মাসুম ও আনেছের সাথে শান্ত মিয়াকে মাদক মামলায় ফাসানোর পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতো ৯ অক্টোবর মাসুম শান্তকে ডেকে দুর্লভদী যাবার কথা বলে স্থানীয় জামালকে নিয়ে ৩ জন একটি মোটরসাইকেলে ওঠে। কাওনান মোড়ে এলে পুলিশের একটি দল মোটর সাইকেলটির গতিরোধ করে। এ সময় পুলিশ শান্তর কাছে বলে ১০ ফিট দূর থেকে ৪ পিছ ইয়াবা কুরিয়ে আনে। ভুক্তভোগীর দাবি পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসাতে ঐখানে ইয়াবা রাখা হয়েছিলো। ৩ জন মোটরসাইকেলে থাকলেও পুলিশ রহস্যজনকভাবে শুধু শান্তকেই আটক করে। পরে থানায় নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়। অভিযানে ৪ পিস ইয়াবা রাস্তাথেকে কুড়িয়ে আনা হলেও মামলায় উল্লেখ করা হয় ৭০ পিস। এছাড়া মামলার এজহারে শান্তকে গ্রেফতারের সময় বর্ননা করা হয়েছে রাতে, কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে দুপুর বেলা দিনের আলোতে। পাশাপাশি কাওনান মোড় থেকে আটক করা হলেও এজহারে উল্লেখ আছে বালিরটেক ব্রীজ। এমন অনেক অসংগতির কারনে মামলা নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীর পিতা মো. গোলাপ হোসেন বলেন, তার ছেলেকে অন্যায়ভাবে ফাসাঁনো হয়েছে। এ মামলায় সুষ্ঠু তদন্ত করে যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সেজন্য তিনি পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মুঠোফোনে কথা হয় অভিযুক্ত মোজাফ্ফরের সাথে। তিনি জানান, শান্ত ও তার পরিবারের মধ্যে বিষয়টি আপোষ-মিমাংশা হয়েছে। উভয় পক্ষ আদালতে যে মামলা ছিলো তা প্রত্যাহারও করেছে। এছাড়া শান্তর বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে তিনি বলেন।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে কথা হয় শান্তর সাথে থাকা জামালের সাথে। জামাল জানায়, ঘটনার সময় আমরা ৩ জন ছিলাম, শান্তর কাছে কোনও ইয়াবা ছিলো না। রাস্তার পাশ থেকে ৪ পিছ ইয়াবা কুড়িয়ে এনে শান্তকে আটক করা হয়। শান্ত কোন মাদকের সাথে সম্পৃক্ত না। তাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।
শান্তর অন্য সহযোগী মাসুমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেননি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও মামলায় জব্দ তালিকার স্বাক্ষী আনেছ বলেন, তিনি গাড়ি চালান। তিনি যখন বালিরটেক ব্রীজে তখন পুলিশ শান্তর কাছ থেকে ইয়াবা পেয়েছে বলে জানায় । তাকে স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর নেয় পুলিশ। তিনি আরো জানান, কতপিছ ইয়াবা ছিলো তা তিনি জানেনই না।
অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available