রাঙামাটি প্রতিনিধি: পাহাড়ি চাকমা তরুণীকে তুলে নিয়ে রাজধানীতে আটকে রেখে চীনে পাচারের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে উক্ত তরুণীকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে এবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ভিকটিমের বোন। ১ মে বুধবার বিকেলে রাঙামাটির নানিয়ারচর থানায় এই অভিযোগে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলায় পাহাড়ি চারজন নারী ও চারজন পুরুষ পাচারকারীসহ মোট আটজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। নানিয়ারচর থানা পুলিশ মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে। তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিস্তারিত জানাতে অপারগতা জানিয়েছে থানা পুলিশ।
মামলার এজাহারে ভিকটিমের বোন উল্লেখ করেন, তারই ছোট বোন বিউটি চাকমা(২১)কে (ছদ্মনাম) ঢাকায় নার্সিংয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে গত ১ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর থানাধীন বুড়িঘাট ইউনিয়নের গর্জনতলী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে বের করে নানিয়ারচরের ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের জুরাছড়ি বেনুবন এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে মাইক্রোবাস যোগে ঢাকা নিয়ে যায়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, মাইক্রোবাসে যাওয়ার সময় আসামিদের কথাবার্তায় নার্সিং পড়তে যাওয়া বিউটি চাকমা(২১) বুঝতে পারেন, তিনি নারী পাচারকাড়িদের খপ্পড়ে পড়েছেন।
জনৈক রিকা চাকমার নেতৃত্বে একদল নারী পাচারকারী ওই তরুণীকে চীনের নাগরিকের সাথে জোর করে বিয়ে দেয় এবং তার সাথে আপত্তিকর ছবিও তোলে। রাজধানীর অজ্ঞাতস্থানে বন্ধি অবস্থা থেকে যেকোনো সময় তাকে চীনে পাচার করে দেওয়া হতে পারে এমন তথ্য জানিয়ে উক্ত ভিকটিম তরুণী তার বড়বোনকে গত ৭ এপ্রিল ফোন করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানায়। বিষয়টি লিখিত আকারে নানিয়ারচর থানা পুলিশকে অবহিত করে মানবপাচার আইনে মামলা করেন ভিকটিমের বড় বোন।
নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে জানান, ভিকটিমের বোনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মানবপাচার ও প্রতিরোধ আইন ২০১৮ এর ৬/৭/৮ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহাম্মেদ জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি নারীদের চীনে পাচারের খবরে টনক নড়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। ইতোমধ্যে পাচার চক্রের সদস্যদের ধরতে কাজ শুরু করেছে রাঙামাটির পুলিশ।
প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ মাধ্যমে পাহাড় থেকে নারীদের চীনে পাচারের বিষয়টি রাঙামাটির পুলিশের নজরে এসেছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মন্তব্য করে, পুলিশ নিষ্ঠার সাথেই তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available