নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের আগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৩টি দেশের ৩৭জন পদাধিকারীর উপর নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিকেন এই তালিকা ঘোষণা করেন। তবে এই তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি নেই। এতেই মুখভার বিএনপির।
মার্কিন ঘোষণা অনুযায়ী এই ১৩টি দেশ হল রাশিয়া, চীন, ইরান, আফগানিস্তান, হাইতি, ইন্দোনেশিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সুদান, সিরিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবয়ে। যে ৩৭ জন পদাধিকারীর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তাঁদের দু’জন হলেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মন্ত্রী।
আমেরিকার ওই ঘোষণা ভোটমুখী বাংলাদেশকে আপাতত স্বস্তি দিয়েছে বলে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমেরিকার বিধিনিষেধ অন্যতম আলোচ্য। বিরোধী দলগুলি প্রত্যাশা করছিল মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু নতুন ঘোষণায় বাংলাদেশের কারও নাম নেই।
২০২১-এর অক্টোবরে মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে পরের বছর অর্থাৎ ২০২২-র মানবাধিকার দিবসের আগে বিএনপি ঘোষণা করে ওই দিন শেখ হাসিনা সরকার বিদায় নেবেন, ক্ষমতায় ফিরবেন খালেদা জিয়া। বাস্তবে ওই দিন ঢাকায় মিটিং-মিছিল করেই কর্মসূচি শেষ করে তারা। এমনকী পরে দু-দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।
এবারের তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকায় সবচেয়ে স্বস্তিতে আওয়ামী লীগ। আর অস্বস্তি বেড়েছে বিএনপি ও তাদের সহযোগীদের। তারা প্রত্যাশা করেছিল বিরোধীদের ধরপাকড়ের অভিযান নিয়ে মুখ খুলবে আমেরিকা। তাও হয়নি। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার হরণের অভিযোগ তুলেই বিএনপি ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের বক্তব্য, মানবাধিকারহরণকারী সরকারের অধীনে অবাধ ভোট হতে পারে না।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিকেন এই তালিকা ঘোষণা করে বলেছেন, মানবাধিকার রক্ষায় আমেরিকায় অঙ্গীকারের কথা বিবেচনায় রেখে এই পদক্ষেপ। এ বছর মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণার ৭৫ বছর। গোটা বিশ্বেই এবার ১০ ডিসেম্বর বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অর্থ হল, সংশ্লিষ্ট দেশের ওই নাগরিকেরা আমেরিকায় যাওয়ার ভিসা পাবেন না। অর্থাৎ মার্কিন ভূখণ্ডে তাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না। এছাড়া, তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমেরিকায় একক বা যৌথভাবে ব্যবসা করতে পারবেন না। বিশ্বের কোথায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করবে না। এছাড়া আমেরিকায় তাদের ধন-সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। মার্কিন ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ তুলতে পারবেন না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available