গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে গার্মেন্টসের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কারখানার শ্রমিকরা। তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের ছয় জন কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টা যাবৎ অবরুদ্ধ করে রাখে।
১৭ মার্চ রবিবার সকালে টঙ্গীর ভাদাম নিশাত নগর এলাকায় ক্রসলাইন নিট ফেব্রিক্স লি. এর প্রায় ২ শতাধিক বিক্ষুব্ধ শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে এ আন্দোলন করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা আজকেই লাগবে, বকেয়া চার মাসের বেতন। দিতে হবে, দিতে হবে বকেয়া বেতন দিতে হবে শ্লোগানসহ আরও বিভিন্ন কথা বলে বিক্ষোভে মিছিল তুলতে থাকে।
শ্রমিক আন্দোলনে অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা হলেন- ফ্যাক্টরি ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র অডিট ম্যানেজার রাসেল ইকবাল, গার্মেন্টস প্রোডাকশন অডিটর মো. আব্দুস সালাম, মার্কেটিং ম্যানেজার মিলন খান, অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ফিনান্স এজিএম এইচ. এম মামুন ও এইচ আর ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম।
সুইং অপারেটর রানা বলেন, নির্বাচনের আগে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আমাদের আশ্বাস দেয় নির্বাচনের পরে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে, কিন্তু এখন তারা আমাদের সাথে কথা বলতেও রাজি না।
সহকারী অপারেটর শাহিদা বেগম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন দ্রুত আমাদের বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হোক। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব বিপদে আছি। রমজানে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
অপারেটর মোসাম্মৎ আসমা জানান, আমার স্বামী নেই, দুই সন্তান নিয়ে আমি কর্ম করে খাই। চার মাসের বেতন নেই। খুব কষ্ট করে দিন পার করছি। দুই সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে পারি না। মা হিসেবে বিষয়টা মেনে নেয়া খুবই কষ্টের।
সিনিয়র অপারেটর জুলেখা খাতুন বলেন, আমার বাবা কয়েকদিন যাবৎ হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসার জন্য টাকা আমাদের কাছে নেই। যদি বকেয়া বেতন পেতাম তাহলে বাবার চিকিৎসা করাতে পারতাম। টাকার অভাবে যদি বাবার চিকিৎসা করাতে না পারি তাহলে নিজেকে নিজে কখনোই ক্ষমা করতে পারবোনা।
ফ্লোর ইনচার্জ জনি আহমেদ বলেন, এই কারখানা কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ের মধ্যে আমাদের বেতন পরিশোধ করে না। আবার অন্য কোথাও কাজ করতে গেলে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে পুনরায় আমাদের এই ফ্যাক্টরিতে নিয়ে আসে। আমরা এখন একেবারেই নিরুপায় হয়ে গেছি। মাঝে মধ্যে মনে হয় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করি।
কোয়ালিটি (কিউ সি) গোলাম মো. বাদল বলেন, এম পি রাসেলের কাছে গিয়েছিলাম পরে স্থানীয় কাউন্সিলরকে তারা অবগত করে। স্থানীয় কাউন্সিলর অনেক আকুতি করার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ কাউন্সিলরের কথা রাখে নাই তাই সে চলে যায়।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, শ্রমিক আন্দোলনের তথ্য পেয়েছি। শ্রমিকরা শান্তিপ্রিয়ভাবে আন্দোলন করছেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশকে অবগত করা হয়েছে ও কারখানা মালিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। শ্রমিকরা যেনো তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পায় সেই লক্ষে কাজ করছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available