স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালামারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের ১১ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে রাসেল সিকদার (২৩) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
৪ জুন মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। একই সাথে তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা যায়, রাসেল সিকদার বোয়ালমারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার সিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশুটি আসামি রাসেল সিকদারের (গুষ্টিগত) চাচাতো বোন হয়। শিশুটি তখন পাশের একটি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। শিশুটির মায়ের বাড়ির পাশে রাস্তায় মুদি দোকান রয়েছে। দোকানে রাসেলের কিছু টাকা বাকি ছিল। ঘটনার দিন ২২ আগষ্ট ২০২২ সালের সন্ধ্যায় রাসেল শিশুটিকে বাড়ি থেকে পাওয়া দেড়শো টাকা নিয়ে আসতে বলে। রাসেল তখন বাড়িতে একাই ছিল। শিশুটি রাসেলর বাড়িতে টাকা আনতে গেলে রাসেল পাশের গোসল খানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের কথা জানাজানির ভয়ে শিশুটিকে হাত পা বেধে, গলায় ওড়না পেচিঁয়ে হত্যা করে।
এদিকে একই সময়ে শিশুটির পরিবার শিশুটিকে খোঁজাখুজি ও মসজিদে মাইকিং করতে থাকে এবং ৯৯৯ কল করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাসেল তখন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। পরে রাসেলের দেখানো মতে গোসল খানার ভেতর শিশুটির মরদেহ উদ্বার করে পুলিশ। রাসেলকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করলে রাসেল নিজেই হত্যার বর্ননা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মো. মোক্তার হোসেন পরের দিন বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আজাদ হোসেন ৩০ এপ্রিল ২০২৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত রাসেলের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
নিহতের বাবা মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা এলাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা এ রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমরা সন্তষ্ট হবো না।
আদালতের রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available