কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় লালন মেলা থেকে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইলসহ শরিফ (২৭) নামে একজনকে আটক করেছে র্যাব। ১৮ অক্টোবর শুক্রবার রাতে শহরের ডায়মন্ড হোটেল থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক শরিফ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বন্দর বাড়িপাড়া গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে।
১৯ অক্টোবর শনিবার র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ইলিয়াস খান মোবাইল উদ্ধার ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা। শুক্রবার ছিল লালন মেলার দ্বিতীয় দিন। মেলায় বিকেল থেকে মানুষের ঢল নামে। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে চুরি হয় অনেকগুলো মোবাইল ফোন।
বেলা তিনটার দিকে ঝিনাইদহ থেকে মেলায় আসা আরমান আলী নামের এক যুবকের পকেট থেকে মোবাইল চুরি হয়। ট্র্যাকিং করে আরমান তার চুরি হওয়া মোবাইল ফোনটি কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেটের ডায়মন্ড হোটেলে আছে বলে জানতে পারেন। রাতে সেখানে পৌঁছে তিনি স্থানীয় লোকজন ও র্যাব শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হোটেল কক্ষের বিছানার নিচ থেকে আরও ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। টের পেয়ে শরীফের সঙ্গে থাকা তিন জন চোর কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে র্যাব শরিফকে আটক করে নিয়ে যায়।
ডায়মন্ড হোটেলের পরিচালক উজ্জ্বল মোল্লা বলেন, লালন মেলায় বেড়াতে এসেছেন জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন হোটেল রুম ভাড়া নেন। শুক্রবার রাতে এক ব্যক্তি এসে দাবি করেন যে লালন মেলা থেকে তার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। ফোনটি যার কাছে, তিনি এই হোটেলের লোকেশনে আছেন বলে দাবি করেন ওই ব্যক্তি। তখন হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে মোবাইল উদ্ধারে সহযোগিতা করেন।
উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনের মালিক আরমান আলী বলেন, ফোনে লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু ছিল। এর সূত্র ধরেই ফোনটি ফিরে পেয়েছি।
র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ইলিয়াস খান বলেন, শরীফরা একটি চক্রের মাধ্যমে কাজ করেন। দেশের যেখানেই জনসমাগম হয়, সেখানেই এই মোবাইল চোর চক্রের সদস্যরা যায়। দামি দামি ফোন চুরি করে। এই চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাকে কুমারখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মাত্র দেড় ঘণ্টায় চক্রটির সদস্যরা ১৬টি মোবাইল ফোন চুরি করেছিল।
উল্লেখ্য, ১২৯৭ (১৮৯০ সাল) বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশে ভাবুক ও প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। সাঁইজির দেহত্যাগের পর তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য এবং মরমি বানীকে প্রচার করার জন্য তার অনুসারীরা তিরোধান দিবসে তাকে বিশেষভাবে স্মরণ করে আসতেছে। বছরে দুটি উৎসব হয়ে থাকে। একটি হয়ে থাকে দোল পূর্ণিমায়, আরেকটি কার্তিক মাসে। প্রতিবছর ১ কার্তিক আড়ম্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস পালন করা হয়। এই দুইটি উৎসব (দিবস) উপলক্ষ্যে চলে গ্রামীণ মেলা। মেলায় সারাদেশ থেকে লাখো ভক্ত দর্শনার্থীদের ঢল নামে। প্রতিবছরে লালন মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available