ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ৭ দিনের নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। ১৮ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় শহরের কমলপুর নিউ টাউন ফুল মিয়া সিটি এলাকায় একটি ৯ তলা বিল্ডিংয়ের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম।
শিশুটির নাম তাসনিদ এহসান। তার বাবা ডা. উসমান গণি। তিনি সেন্ট্রাল নামের স্থানীয় একটি হাসপাতালের মালিক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে স্বজনরা জানান, বাচ্চাকে খাইয়ে ঘুমিয়ে ছিল মা। বাবা ঘুমিয়ে ছিল আরেক রুমে। ঘরে শিলা ও মিম নামে দুইজন কাজের লোকও ছিল। এছাড়াও সুমাইয়া নামের একজন নারী ছিল। সে শিশুটির মায়ের বান্ধবী। হঠাৎ রাত তিনটার দিকে মা বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গেলে ১০ মিনিটের মধ্যে বাচ্চাটি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তৎক্ষণিক ভৈরব থানায় এসে অভিযোগ দেয় নিখোঁজ শিশুটির পরিবার। সবাই খোঁজাখুঁজি পর সাড়ে আটটার দিকে কাজের মহিলার মাধ্যমে জানতে পারে শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোপ ঝাড়ে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় দুই কাজের মেয়ে ও নবজাতকের মা ও তার বন্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নিয়ে আসে পুলিশ।
এ দিকে স্থানীয়রা জানান, ডা. উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী তৃশা। তাদের পরিবারের বোরাক নামের দেড় বছরের একট ছেলে সন্তান রয়েছে। সাত দিন আগে ডা. উসমান গনির মাধ্যমে সিজারিয়ান অপরেশনের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম হয়। তবে বেশ কিছুদিন যাবত তাদের পরিবারে কলহ লেগে রয়েছে। প্রায় সময় তাদের বাসা থেকে চিৎকার চেচামেচির শব্দ শুনতে পাওয়া যেত।
তবে স্থানীয়রা আরও জানান, বিল্ডিয়ের কেউ প্রবেশ করেনি। ঘটনাটি ঘরের মধ্যেই কিছু একটা ঘটেছে। শিশুটিকে বিল্ডিং থেকে ফেলে দিয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
নিহতের মা তৃশা আক্তার জানান, তাসনিদ এহসান আমার ৭ দিনের ছেলে। মধ্যরাতে কে বা কারা আমার শিশু সন্তানটিকে নিয়ে গেছে। আমি বাথরুমে গেলে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে আমি আমার সন্তানকে বিছানায় পায়নি। আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বিল্ডিংয়ের কেয়ার টেকার আফজাল জানান, ভোর ৫টায় ডা. উসমান গনি আমাকে জানান তার সন্তান কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। তার চিৎকারে পাশের ফ্লাটের প্রতিবেশিরা জেগে যায়। পরে সবাই মিলে অনেক খোঁজখুঁজি করেও বাচ্চাটি পাওয়া যায়নি। কাজে মেয়ে জানালো বাল্ডিংয়ের অদূরে একটি ঝোপে বাচ্চাটি পড়ে আছে। পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়।
ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে নবজাতকটিকে হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। শিশুটির মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। বিল্ডিং থেকে ফেলা হয়েছে কিনা বা মেরে ফেলে রাখা হয়েছে কিনা; তা বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় নবজাতকের পিতা ডা. উসমান গণি, মা তৃশা, বান্ধবী সুমাইয়া ও কাজের মেয়ে মীম ও শিলাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেন জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available