নিজস্ব প্রতিবেদক: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ‘লক্ষ্মীপূজা’ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর প্রবারণা পূর্ণিমার দিন বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে উৎকণ্ঠায় দুই ধর্মের মানুষেরা। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন কোনো কর্মসূচি না দিতে বারবার অনুরোধ জানিয়েছিল পূজা উদযাপন পরিষদ ও বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ। যদিও বিএনপি সেই অনুরোধে কর্ণপাত করেনি। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করতে অনড় দলটি।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, লক্ষ্মী ধনসম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্ত গৃহে আসেন। কোজাগরী অর্থাৎ কে জাগরী বা কে জেগে আছো। শাস্ত্র মতে, এই রাতে লক্ষ্মী সবার বাড়িতে যান। বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা হয়। এছাড়া দুর্গাপূজার প্রতিটি মণ্ডপে লক্ষ্মীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে ঢাকাসহ সারাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শনিবার ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করবে। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো সন্ধ্যায় আকাশে রঙিন ফানুস উড়ানো।
আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা– এ তিন মাস বৌদ্ধদের কাছে বর্ষাবাস বা ব্রত অধিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত। বর্ষার সময় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে দেখে ভগবান বুদ্ধ ভিক্ষু সংঘকে তিন মাস বিহারে অবস্থান করে শীল–সমাধি–প্রঞ্জার সাধনা করার জন্য বিনয় প্রঞ্জাপ্ত করেন । সেই থেকেই তিনমাস বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান পালনের শুরু । গৃহী বৌদ্ধরাও এ তিনমাস ব্রত পালন করে থাকে । এ তিমাস ব্রত পালনের পরিসমাপ্তি প্রবারণা ।
অথচ দুই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দিন সরকারবিরোধী মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা করেছে রাজধানীবাসী। সেই সাথে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে সনাতন ও বৌদ্ধা ধর্মালম্বীরা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, ‘আমরা বারবার আহ্বান জানিয়েছিলাম যে পূজার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য। রাজনৈতিক দলগুলো যদি বিষয়গুলো না বুঝেন, তাহলে আর কি করার আছে। সবাই তো দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন। আশা করি সবকিছু ঠিকঠাক মতো হবে।’
বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য প্রবারণা পূর্ণিমা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, এ দেশের রাজনৈতিক নেতারা যেকোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বিবেচনা করে আসন্ন পূর্ণিমা তিথিকে রাজনৈতিক কর্মসূচি মুক্ত রাখবেন। কিন্তু দেশের কিছু রাজনৈতিক দল হয়ত অনিচ্ছাকৃত ও অসাবধানতাবশত ওই দিবসে কর্মসূচি দিয়েছে। শঙ্কাহীনভাবে ধর্ম পিপাসু মানুষের যাতায়াত এবং দ্বিধাহীন চিত্তে ধর্ম পালনের যথার্থ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে আমরা দেশের রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের আন্তরিক সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করি। একইসঙ্গে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে প্রবারণা পূর্ণিমা নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানাই।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available