লাইফস্টাইল ডেস্ক: প্রবাদে আছে- অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। অলস লোককে কেউ পছন্দ করে না। তা সত্ত্বেও আমরা অনেকেই আলসেমিতে জড়িয়ে পড়ি। আজকের কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে রাখার অভ্যাস আমাদের অনেকের মধ্যেই আছে। বিশেষ করে কাজের সময় যদি আলসেমি জেঁকে বসে, তাহলে ভালোভাবে কাজ করা যায় না। আলসেমি কাটানোর জন্য ১০টি কার্যকরী পদ্ধতি আছে। এসব পদ্ধতিতে আপনি সহজেই আলসেমি দূর করতে পারবেন।
আনন্দে থাকুন, সজীব থাকুন
আনন্দপূর্ণ মনোভাব আলসেমি থেকে সবসময় দূরে রাখে আমাদের। আনন্দ নিয়ে যেকোনো কাজ করলে মন প্রফুল্ল থাকে। তখন আর সহজে আলসেমি ভর করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, আনন্দপূর্ণ থাকার জন্য সকালের নাশতায় পুষ্টিকর খাবার রাখা বাঞ্ছনীয় পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার মন ও শরীরকে প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে।
নিজেকে পুরস্কৃত করুন
নিজেকে পুরস্কৃত করার বিষয়টি একটু অদ্ভুত মনে হলেও আলসেমি দূর করার ক্ষেত্রে এটা সর্বোত্তম উপায়। কঠিন কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে না রেখে এখনই করার ইচ্ছা করুন। সেই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ নিজের জন্য পুরস্কারের প্রতিজ্ঞা করুন। কাজ শেষ হলে প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার গ্রহণ করুন। এভাবে আলসেমি দূর করা যায়। পেনিসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করার সময় অডিও বুকস শুনলে তা কাজে দেয়। অর্থাৎ ব্যায়াম করার সময় সেটিই নিজেকে দেওয়া সর্বোত্তম পুরস্কার। এছাড়া কঠিন কাজ শেষ হলে পছন্দের গান শোনা, প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলা প্রভৃতি নানাভাবে নিজেকে পুরস্কৃত করা যায়।
দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান, জীবন বদলে যাবে
চিন্তার ভারে ন্যুব্জ আমাদের মস্তিষ্ক। সেখানে ভালো চিন্তা যতখানি আসে, তার চেয়ে অনেক বেশি আসে খারাপ চিন্তা। ফলস্বরূপ অবচেতনভাবে আমাদের মধ্যে আলসেমি জেঁকে বসে। ইতিবাচক চিন্তা আমাদের কর্মস্পৃহা বাড়ায়। অলসতায় আনে ব্যর্থতার ভয়। মনোবিজ্ঞানীদের অভিমত, দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর মধ্য দিয়েই জীবনকে ইতিবাচক করে তোলা যায়। আর আলসেমি নামক রোগকে দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব।
কঠিন কাজগুলো আনন্দে পরিপূর্ণ করে তুলুন
সাধারণত যেসব কাজ আমাদের কাছে কঠিন মনে হয়, সেসব কাজ আমরা এড়িয়ে চলি। বিরক্তিকর বা ক্লান্তিকর কাজগুলো আমরা যদিওবা করতে বাধ্য হই, মনোযোগ দিতে পারি না। ফলে কাজের মান খারাপ হতে থাকে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, কঠিন কাজকে কঠিন না ভেবে তাকে সহজ করে নেওয়া উচিত। কঠিন কাজের সময় গান বা পডকাস্ট শোনা যেতে পারে। এতে করে কঠিন কাজটি আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
প্রোটিনযুক্ত খাবার খান
কিছু খাবার খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে। এতে আলসেমির আশঙ্কাও কম থাকে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন, উচ্চ-প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে অলসতা দূর হয়ে যায়। এসব খাবার হলো- গ্রিক দই, কাজুবাদাম, ডিম, টুনা মাছ প্রভৃতি।
চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
অ্যালকোহলের মতো চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চললে কাজের মধ্যে আলসেমি আসে না। অতিরিক্ত চিনি দেওয়া খাবার ও পানীয়, সাদা রুটি ও পাস্তা এবং অন্যান্য ফাস্টফুড খেলে দেহে এক ধরনের বিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যার কারণে আলসেমি জেঁকে বসে।
পর্যাপ্ত ঘুমান ও বিশ্রাম নিন
একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর অবসন্ন হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ঘুমের আগে মোবাইল দেখা, টিভি দেখা কিংবা গান শোনা ভালো ফল বয়ে আনে না। মনোবিজ্ঞানীরা এসব অভ্যাস পরিত্যাগ করতে বলেন। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামে অলসতা দূর হয়। কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
অলসতা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি নিশ্চিত উপায় ব্যায়াম। মাত্র কয়েক মিনিট হাত-পা এদিক-ওদিক ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে অবসাদ দূর হয়ে যায়। ব্যায়ামের উপকারিতা হলো- খিটখিটে মেজাজ দূর করে, উদ্বেগ ও চাপ কমাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, দিনের কিছু অংশ হাঁটা কিংবা সাইকেল চালালে আলসেমি দূর হয়ে যায়। মনে আসে প্রফুল্লতা। কাজে উদ্যম সৃষ্টি হয়।
মানসিক চাপমুক্ত থাকুন
যখন আমরা মানসিক চাপে থাকি, তখন আমাদের কাজের উদ্দীপনা ব্যাহত হয়। আলসেমি জেঁকে বসে। ক্রমাগত মানসিক চাপ অনেক সময় উচ্চরক্তচাপ, ডায়েবেটিস কিংবা থাইরয়েডের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
সঙ্গে রাখুন পানি
পানির অপর নাম জীবন। বলা হয়ে থাকে, পানি ১০১টা রোগের উপশম ঘটাতে পারে। সেই সঙ্গে আলসেমি কাটাতেও মোক্ষম অস্ত্র পানি। অবসাদগ্রস্ততা দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প আর হয় না। এটি আমাদের অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available