লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক বইপ্রেমী নববধূ প্রায় দুই’শ বইয়ের লাইব্রেরি নিয়ে স্বামীর সাথে শ্বশুর বাড়ি হাজির হয়েছেন। নববধূ স্বপ্ন দেখছেন শ্বশুরবাড়িতে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি গড়বেন। ওই লাইব্রেরিতে এলাকার বউ-শাশুড়িসহ স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা এসে বই পড়বে।
২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকালে নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বাবার বাড়ি থেকে বই নিয়ে উপজেলার চর ফলকন গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে আসেন। বই ছাড়াও বাহারি পদের দেশীয় পিঠাও নিয়ে আসেন। ওইসব পিঠা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়েছেন মুমুর শাশুড়ি কামরুন নাহার।
মুমু চর ফলকন গ্রামের ডা. অবাদুল হক চেয়ারম্যান বাড়ির মহিউদ্দিনের মেয়ে। একই গ্রামের রমজান আলী মৌলভীবাড়ির মাকছুদুর রহমানের ছেলে তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। মুমু ঢাকার ইডেন কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। শনিবার মুমুর বউভাতের আয়োজন হয়। বউভাত অনুষ্ঠানের একদিন পরেই শ্বশুরবাড়িতে বই নিয়ে আসেন এই নববধূ।
মুমুর পরিবার ও স্বজনরা জানান, বই পড়তে তার ভালো লাগে। বই সংগ্রহ ও পড়া তার প্রিয় শখ। শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসা সব বই তার পড়া হয়েছে। এসব বইয়ের বেশির ভাগই তার বিভিন্ন সময়ের জমানো টাকায় কেনা। অল্প কিছু বই জন্মদিনসহ বিভিন্ন দিবসের উপহার, ৮-১০টি বই তার স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া। মুমুর প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রায় শতাধিক বই পড়েছেন তিনি।
মুমুর স্বামী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিল স্ত্রীর সঙ্গে করে আনা বইয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তাতে বাহ্ বাহ্ দিয়ে কমেন্ট করেছেন অনেকেই।
মুমুর মা ছালেহা বেগম জানান, তার মেয়ের প্রিয় শখ বই পড়া। শাড়ি-চুড়ি, কসমেটিকসে আগ্রহ নেই। ছোটবেলা থেকেই টাকা জমিয়ে বই কেনা ছিল তার অভ্যাস। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় মেয়ের সংগ্রহে থাকা সব বই নিয়ে গেছে।
নববধূর শাশুড়ি কামরুন নাহার বলেন, আমার মেয়ে নেই, দুই ছেলে। ছেলের সুবাদে একটা মেয়ে পেয়েছি। এই লক্ষ্মী মেয়ে আসার সময় অনেক বই নিয়ে আসে। এতে আমি খুবই খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমিও টাকা জমিয়ে বউকে বই কিনে দেব।
নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বলেন, বই কেনা, বই পড়া আমার শখ। বই উপহার পেতে আমার খুব ভালো লাগে। অনেক দিন থেকে জমানো বইগুলো বাবার বাড়িতে রেখে আসতে মন চাইছিল না; সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম। স্বপ্ন দেখছি শ্বশুরবাড়িতে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি গড়ব। এলাকার সব বউ-শাশুড়ি বই পড়বে। এতে বউ ও শ্বাশুড়ির মধ্যে হৃদ্যতাও বাড়বে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available