যবিপ্রবি প্রতিনিধি: অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা পেনশন সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে মানববন্ধন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (যবিপ্রবিশিস)।
২৬ মে রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন দত্ত লাইব্রেরি কাম একাডেমিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে ছাত্রদের ক্লাসরুমে পড়ালেখা করানো, কিন্তু কোনো এক কুচক্রী মহলের কুচক্রের কারণে ক্লাস রেখে আজ আমরা আন্দোলনের জন্য মাঠে নেমেছি। আমরা আমাদের ছাত্রদের ভালোভাবে পড়াতে চাই, কিন্তু তার জন্য আমাদেরও ভালো থাকতে হবে। আজকে সকল জায়গায় শিক্ষকদের জন্য বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। আমরা চাই সরকারের কাছে যে বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সেটা প্রত্যাহার করা হোক। একইসাথে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নির্ধারণ করার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যেই সম্মান দেওয়া হয়, আমাদের দেশে সেই তুলনায় অনেক কম সম্মান দেওয়া হচ্ছে। আমরা বৈষম্য নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সম্মান চাই। আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে, আমরা আরও কঠোরতম আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, পাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের সকল দেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল আছে, একমাত্র বাংলাদেশে সেটা নেই। আমাদের সুপার গ্রেড দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা থেকে শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ দেশের এবং বাইরের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম সারির ছাত্র হিসেবে বের হয়ে দেশে প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করি। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে আজ আমাদের মানববন্ধনে যোগ দিতে হচ্ছে, এটা বাংলাদেশের জন্য একটি লজ্জার বিষয়। যদি পেনশন প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হয়, তাহলে একটা সময় ভালো মানের শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করবে না। হয় তারা বিদেশে পাড়ি জমাবে, বিসিএস এর দিকে ধাবিত হবে বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবে। পিছনের সারির শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতায় আসলে তা হবে দেশের শিক্ষার জন্য অশনি সংকেত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের সাথে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করে আজ আমরা এই মানববন্ধন করছি। আগামী ২৮ মে সকাল ১০টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি পালন করব। এরপরেও সমাধান না হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য প্রদান করেন শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হাসান, ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাফিরুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ইমরান খান, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নাসিম রেজা, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুনিবুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ, এর পূর্বে গত ৭ মে একই দাবিতে মৌন মিছিল করেছিল যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available