হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) স্নাতক কোর্সে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ক্রেডিট ফি গুণতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের । অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে প্রতি ক্রেডিট পঞ্চাশ থেকে আশি টাকা পরিশোধ করতে হয়, সেখানে হাবিপ্রবিতে ১৫০ টাকা যা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে বহন করা কষ্টকর ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সেমিস্টারে প্রতি ক্রেডিট ১৫০ টাকা করে অন্যান্য আরও আনুষঙ্গিক ফিসহ এক সেমিস্টারেই পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা গুণতে হয় শিক্ষার্থীদের। সেমিস্টার সিস্টেম অনুযায়ী প্রতি বছরে দু'সেমিস্টার করে চার বছরে মোট আট সেমিস্টার শেষ করতে হয় তাদের । ফলে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার আগে টাকা ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হয়।
জানা যায়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ক্রেডিট ফি দিতে হয় ৭৫ টাকা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৬ টাকা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ টাকা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৫ টাকা, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ টাকা, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৫ টাকা এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১০ টাকা দিতে হয় ।
মাত্রাতিরিক্ত ক্রেডিট ফি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যেখানে ক্লাস রুম সংকট, সাথে ক্লাস রুমে নেই পর্যাপ্ত সুবিধা- সেখানে এত টাকার ক্রেডিট ফি হাস্যকর । গুণগত শিক্ষার পরিবেশ ব্যবস্থা করলে অতিরিক্ত ক্রেডিট ফি মানা যেতো, কিন্তু উচ্চমানের পরিবেশ না থাকার পরও এত টাকার ক্রেডিট ফি যেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাইভেটের ছোঁয়া ।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানেরা ভর্তি হয়। যাদেরকে সাধারণত স্নাতক পড়াকালীন সময়েই বাড়ি থেকে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়। টিউশনি করিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের খরচ চালায়। প্রতি সেমিস্টারে এতগুলো টাকা জোগাড় করতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক শিক্ষার্থীকে না খেয়ে থাকতে হয়।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট থাকায় প্রতি মাসে মেস ভাড়া, খাবারসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ যোগাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে প্রতি সেমিস্টারে এত বেশি ক্রেডিট ফি বাবদ পরীক্ষার ফি দেওয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. জাহাঙ্গির কবির বলেন, পূর্বে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ছিল ক্রেডিট ফি। কিন্তু বিগত সময়গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে ক্রেডিট ফি ১২৫ থেকে ১৫০ করে। যেহেতু ইউজিসি থেকে অনুমোদন করা তাই আমাদের হাতে নেই।
অতিরিক্ত ক্রেডিট ফি কমানোর বিষয়ে নবনিযুক্ত উপচার্য অধ্যাপক ড. মো. এনামুউল্যা বলেন, যেহেতু ১৫০ টাকা ক্রেডিট ফি ইউজিসি থেকে অনুমোদিত সেক্ষেত্রে আমরা চাইলেও কমাতে পারবো না। তবে আমরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ফির পরিসংখ্যানসহ বিষয়টি ইউজিসিতে পাঠাবো এবং ক্রেডিট ফি কমিয়ে আনার প্রস্তাব করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available