সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা নিদিষ্ট সময়ে দুপুর ১ টায় শুরু হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যে যার মত লিখছে, পরীক্ষার হলে পিন পতন নিরাপত্তা। ঘড়িতে সময় তখন বিকেল ৪ টা ৪৫ মিনিট। আর মাত্র ১৫ মিনিট পরে শেষ হবে পরীক্ষা, কাজেই তখন চলছে খাতায় রিভিশন দেয়ার কাজ।
এমন সময় হঠাৎ বিকট শব্দে সিমেন্টের এক খন্ড টুকরো চলন্ত ফ্যানে লেগে পড়লো ৩ পরীক্ষার্থীর মাথায়। মুহুর্তেই পরীক্ষায় খাতা রক্তে লাল। আতঙ্ক কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো পরীক্ষার হলে ছড়িয়ে পড়লো। বাকী পরীক্ষা আর দেয়া হয়নি সোহরাওয়ার্দী কলেজে পুরাতন ভবনের ৩১৪ নাম্বার রুমের পরীক্ষা দিতে আসা কবি নজরুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাত ইমনের। পরীক্ষার হলে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়ার সময় পাশে থেকে এভাবেই দুর্ঘটনার বিবরণ দিচ্ছিলেন, ইয়াছিন আরাফাতের বন্ধু ও প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুন নূর।
৩০ অক্টোবর সোমবার এ ঘটনায় আহত হন কবি নজরুল কলেজের ৩ শিক্ষার্থী। আহত ৩ জন শিক্ষার্থী হলেন, বাংলা বিভাগে ইয়াসিন আরাফাত ইমন, সোনিয়া এবং অর্থনীতি বিভাগের আনাস। তারা সকলেই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ন্যাশনাল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদুল হাসান জানান, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে। এরপরে সমস্যা হলে সিটি স্ক্যান করাতে হবে। এছাড়াও প্রতি ৩ দিন পর পর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করাতে হবে।
গুরুতর আহত শিক্ষার্থী ইমন জানান, আমি লিখছিলাম। হঠাৎ করেই কোন কিছু বুঝেওঠার আগেই গুলির মতো ইটের এক পলেস্তারা আমার মাথায় আঘাত করে। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই, আমার মাথা ফেটে গেছে, সেলাই দেয়া হয়েছে। আমি এখন চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবো তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি। আমার সামনে আরও পরীক্ষা আছে সেগুলোই বা কিভাবে দেবো?
এঘটনায় মুঠোফোনে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো মোহসিন কবির বলেন, ঘটনার সময় আমি কলেজেই ছিলাম। ঘটনার সাথে সাথেই আহত ছাত্রকে আমাদের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ককে দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।
ঐ রুমে আবারো পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আর বিকল্প নেই। ভবনটি সংস্কারের জন্য আমরা ৪ বার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরকে চিঠি দিয়েছি। আজও তাদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, আমার নির্দেশ ছিল পুরাতন প্লাস্টার যেগুলো আলগা অবস্থায় আছে সেগুলো ফেলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কর্মচারীদের অসর্তকার কারণেই আজকের এ দুর্ঘটনাটি ঘটলো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available