নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় হঠাৎ করেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গরম কাপড়ের দোকানে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরা। এ জেলায় দিনে বিক্রি অন্তত ৩ কোটি টাকা। শীতের গরম কাপড় কিনতে সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা ছুটছেন শপিংমলের বিভিন্ন বিপনি-বিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে। এ বছর শুরুতে শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকলেও গত তিন দিনে বেড়েছে শীত। তবে শীত যত বাড়বে বেচা-কেনা তত জমজমাট হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। এ বছর গরম কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
শহরের আভিজাত গীতাঞ্জলি শপিং কমপ্লেক্স, দেওয়ান বাজার, আনন্দ বাজার ও কাপড়পট্টিসহ কয়েকটি শপিংমলে বিভিন্ন শীতের কাপড়ে দিয়ে সাজানো হয়েছে। এসব দোকানে গোলগলা ও হাই গলার গেঞ্জি, হুডি, সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট, ব্লেজার, কাটিগানসহ অন্যান্য শীতের পোশাক ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাক দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা, জ্যাকেট ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা এবং ব্লেজার ২ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দরদাম করে কিনছেন ক্রেতারা।
জেলার ১১টি উপজেলায় প্রায় ১২শ পোশাকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমের ২ মাসে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার শীতের পোশাকের বাণিজ্যের আশা ব্যবসায়িদের।
ব্যবসায়িরা জানান, জেলায় এ বছর শীত কিছুটা দেরিতে পড়ছে। শীতকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের নজর কাড়তে বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় দিয়ে দোকানগুলো সাজানো হয়েছে। শীত কম থাকায় বেচা-কেনা কম হচ্ছিল। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। তবে হঠাৎ করে শীত বাড়ায় বেচা-কেনা বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বাড়ায় বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। তবে শীতের তীব্রতা যদি না বাড়ে অনেক ব্যবসায়ি লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
এদিকে শীতের কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা ছুটছেন ফুটপাতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা। সাধ্যের মধ্যে শিশুদের শীতের পোশাক পেয়ে যাচ্ছেন তারা। যেখানে ১০০-৪০০ টাকার মধ্যে বাচ্চাদের জন্য মোটা পায়জামা, হাইগলার গেঞ্জি ও টপস পাওয়া যাচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রোতারা। তবে বেচা-কেনা ভালো বলে জানান ফুটপাতের ব্যবসায়িরা।
শহরের ব্রিজ মোড় ফুটপাতের পোশাকের এক দোকানী বলেন, গত দুই মাস থেকে বেচা-কেনা বেড়েছে। প্রতিদিন ৪-৬ হাজার টাকা বেচা-কেনা হচ্ছে। সাধ্যের মধ্যে বাচ্চাদের জন্য ১০০-৪০০ টাকার মধ্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী সাদাত আহমেদ বলেন, এ বছর লাগাতার হরতাল-অবরোধ। তার মধ্যে শীতের প্রকোপ কম। শীত কম থাকায় প্রতিদিন বেচা-কেনা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বিক্রি কম হওয়ায় বলা যায় লোকসান হচ্ছে। তবে শীত বাড়ায় বিক্রি বেশি হলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো ইনশাল্লাহ।
পাইকারি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম তোতা বলেন, শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে আরও এক মাস আগে প্রায় তিন কোটি টাকার বিভিন্ন ধরণের পোশাক কেনা হয়েছে। তবে বেচা-কেনা খুবই মন্দা ছিল। গত চারদিন আগেও কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল। পোশাক নিয়ে দুশ্চিন্তায় মধ্যে ছিলাম। তবে হঠাৎ শীত পড়ায় দুশ্চিন্তা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। ব্যবসায়িরা মালামাল কিনতে আসছে। তবে এ বছর জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি।
নওগাঁ গার্মেন্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ তুহিন আহম্মেদ বলেন, জেলা শহরে প্রায় দুইশতাধিক পোশাকের দোকান রয়েছে। এ বছর দেরিতে শীত পড়েছে। শুরুতে শীত না থাকায় ব্যবসায়িরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে শীতের আমেজ পড়তে শুরু করায় বেড়েছে বেচা-কেনা। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে ২০-২৫ হাজার টাকা বেচা-কেনা হচ্ছে। সে হিসেবে দিনে অন্তত ৫০ লাখ টাকার বেচা-কেনা হচ্ছে। তবে শীত বাড়লে বেচা-কেনা আরও বাড়বে বলে জানান ব্যবসায়ি এ নেতা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available