বাবুল আকতার, খুলনা ব্যুরো: ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শেখ রাসেল দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে ১৮ অক্টোবর বুধবার সকালে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক, ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. নিজামুল হক মোল্যা, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, জেলা পরিষদ, সরকারি-বেসরকারি দফতর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এর আগে কেএমপি মেয়রের নেতৃত্বে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে সার্কিট হাউজ ময়দান পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। বুধবার সকাল ১০ টায় খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে রাজধানী ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। পরে একই স্থানে আলোচনা সভা, কেক কাটা, শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, নিষ্ঠুর ঘাতক ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারীরা রাসেলের মতো সম্ভাবনাময় শিশুর হত্যার বিচার করেনি। বরং আইন করে তার বিচারের পথ বন্ধ করেছিলো।
তিনি আরও বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে দেশ ও জাতির জন্য যে কাজগুলো করতেন সেগুলো বাস্তবায়ন করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। নতুন প্রজন্মের প্রতি আমার এই আহ্বান থাকবে। আগস্টের সেই কাল রাতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ সঠিক পথে রয়েছে।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সাজিদ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. নিজামুল হক মোল্যা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার, প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলমগীর কবির ও সরদার মাহাবুবুর রহমান।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিরা শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন। পরে দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি খুলনা জেলার ১০টিসহ সারাদেশের ৫৫৫টি জয় স্মার্ট সার্ভিস এন্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সকালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবন চত্বরে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা, কেক কাটা এবং চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে নির্মিত থিম সংগীত, পোস্টার, লিফলেট, প্রামাণ্যচিত্র বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় শেখ রাসেল দিবস উদযাপন করে। জেলা ও মহানগরীর মসজিদসমূহে শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। দুপুরে সরকারি শিশু সদন, এতিমখানা ও শিশু পরিবারসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় জাদুঘর ও প্রত্মতাত্ত্বিক স্থানসমূহে শিশু-কিশোরদের জন্য বিনামূল্যে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available