জাবি প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে বাংলা ব্লকের ডাক দিয়েছ সারা দেশের শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
জুলাই ৭ রোববার বেলা ১১টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামন থেকে একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকড’ কর্মসূচিতে অবস্থান নেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল হয়ে পড়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক।
আন্দোলনে অর্থনীতি বিভাগে পড়া মুক্তিযোদ্ধা সন্তান খন্দকার জুবায়ের রহমান বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং আমি মনে করি, এই যে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি পরিচালিত হচ্ছে এ থেকে আমাদের বের হওয়া উচিত। যেই সাহসে আমার বাবা ১৯৭১ সালে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো সেই সাহসে আমি যদি প্রতিযোগিতামূলক কোনো পরীক্ষায় কোটা ছাড়া পরিক্ষা দিতে ভয় পাই তাহলে সেটা আমার বাবার প্রতি অন্যায় হবে৷ আমি মনে করি, আমার বাবা যে সাহস নিয়ে ১৯৭১ সালে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো সে সাহস নিয়ে আমার সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাওয়া উচিত। আমি চাই না কোটা ব্যবহার করে কারো প্রতি বৈষম্য করা হোক।’
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম আবর্তনের জিয়া উদ্দীন আয়ান বলেন, ‘সারাদেশে ঘোষিত বাংলা ব্লকড কর্মসূচির অংশ হিসাবে আমরা ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছি। আমরা বিগত কয়েকদিন যাবত এক উদ্দেশ্য নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছি, আমাদের একটাই দাবি কোটার বৈষম্য নির্মুল করা হোক। আমরা বিগত চারদিন যাবত এই উদ্দেশ্যেই রাজপথে আছি এবং থাকবো। আমাদের দাবিগুলো যদি মেনে নেয়া না হয় তবে আজ আমরা সারাদেশের শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকড’ করেছি এরপরে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘২০১৮ সালে জারি করা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছি। অনতিবিলম্বে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম আবর্তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আজকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করেছি৷ আমরা সরকারকে জানাতে চাই যে আপনারা কোটার যৌক্তিক সংস্কার করুন। কোটা বহাল কোনো সমাধান নয়। আপনারা দ্রুত সকল সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করুন। অন্যথায় সারা বাংলার শিক্ষার্থীরা মিলে সারা বাংলাকে বন্ধ করে দেয়া হবো।’
এসময় উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছি যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করে এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত কোনো সম্পদের ক্ষতি সাধন না হয়। গত চারদিন আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ছিলাম এবং এখনো আছি৷ জরুরি অবস্থায় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স গাড়িগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে দ্রুত পার করে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি, যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পারি।’
উল্লেখ্য, পূর্বকর্মসূচির অংশ হিসেবে টানা ৪ দিন মহাসড়ক অবরোধ করে আসছে জাবি শিক্ষার্থীরা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available