নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আলোচিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া হত্যাকাণ্ডের ৮ দিন পর যমজ দুই ফুটফুটে কন্যা সন্তানের বাবা হলেন তিনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেখা হলো না তাদের মুখ। ২২ মে উপজেলার পাহাড়তলীতে নির্বাচনের প্রচারণা করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন তিনি।
তার মৃত্যুর ঘটনায় স্থগিত হয়ে পড়ে উপজেলা নির্বাচন। রায়পুরা উপজেলায় তৈরি হয়েছে থমথমে অবস্থা। এরই মাঝে দীর্ঘ ১৪ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঘরে এসেছে যমজ কন্যা সন্তান। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহার দেখে যেতে পারলেন না দুই সন্তানকে বাবা।
৩০ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে অস্ত্রো পাচারের মাধ্যমে নিহত সুমনের স্ত্রী সাজিয়া আফরিন লিজা যমজ সন্তান জন্ম দেন। নবজাতক দুই ফুটফুটে কন্যা সন্তান এবং তাদের মা সুস্থ আছেন।
নিহত সুমনের বাবা চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, কতটা হতভাগা কপাল নিয়ে পৃথিবীতে আজ জন্মগ্রহণ করেছে আমার দুই নাতনি। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সন্তানের মুখ দেখবে বলে সুমন অধীর আগ্রহে ছিল।
তবে দুঃখ হলো, আমার ছেলে নিজ সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারল না। সন্ত্রাসীরা আমার ছেলে সুমনকে হত্যা করেছে। আমি আর কি বলবো, ভাষা খুজে পাচ্ছি না! আমি আমার নাতনিদের কি বলব তারা বড় হলে! তাদের জন্য সবার নিকট দোয়া চান এই দাদা।
এরআগে, ২২ মে উপজেলার চরাঞ্চলে পাড়াতলীতে প্রচারণায় যান তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া। একই দিন ওই ইউনিয়নে যান তার প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাড়াতলীর মামদিরকান্দি গ্রামের ছলিমবাড়ির সামনের রাস্তায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে একপর্যায়ে রুবেল সমর্থকদের সরাতে সুমনের গাড়ি থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।
এতে উত্তেজিত হয়ে রুবেল সমর্থকরা তার গাড়ি ভাঙচুর ও ঘেরাও করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। একপর্যায়ে সুমন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর সময় মারধরের শিকার হন।
আহত সুমনকে তার কর্মীরা উদ্ধার করে দুপুরের দিকে পাড়াতলী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পর রায়পুর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এখনো পুরো রায়পুর উপজেলা চড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় সুমনের বাবার করা মামলায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available