নীলফামারী প্রতিনিধি: আগাম শীতের সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কৃষকরা। বেশি লাভের আশায় তারা প্রতি বছর গরমের মধ্যেই শীতকালীন সবজি চাষ করেন। যদিও এবার সারা বছরেই সবজির বাজার চড়া। আর চড়া বাজারে আরও বেশি লাভের আশায় বৃষ্টিহীন আবহাওয়ায় তপ্ত দিনে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিশ্রম করছেন কৃষকরা।
উপজেলার বোতলাগাড়ী, কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর, কাশিরাম ও খাতা মধুপুর ইউনিয়নের কৃষকরা শীতকালীন সবজি যেমনঃ মুলা, ফুলকপি, বাধাকপি, সিম, টমেটো, পালংশাক, লালশাক, পুইশাক ও পেয়াজ শীত নামার আগেই বাজারে নিয়ে আসে। এ ছাড়াও সবজি ও চারার জন্য বিখ্যাত এই সকল এলাকার কৃষকরা শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন সবজি এবং চারা চাষ করে সরবরাহ করেন আশপাশের জেলা-উপজেলাতে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, সৈয়দপুরে প্রতি বছর শীতকালীন সবজির ভালো চাষ হয়ে থাকে। বৃষ্টি কম হওয়ায় চারা ভালো হয়েছে। শীত আসার এখনও দেরি থাকলেও এখনই সবজি চাষীরা আগাম সবজি চাষ শুরু করে দিয়েছেন। এ বছর উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উত্তর জনপদের সৈয়দপুর উপজেলা সবজি চাষে ব্যাপক সুনাম রয়েছে।
বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাসকান্দর এলাকার রেজাউল প্রতি বছর আগাম সবজি চাষ করেন। এবার দুই বিঘা জমিতে আগাম ফুল কপি লাগিয়েছেন। দিন রাত পরিশ্রম করছেন। ফুল কপি পরিপূর্ণ হতে আরও বেশ কিছু দিন সময় লাগবে। তিনি জানান, আগাম সবজি চাষ কষ্টসাধ্য হলেও দ্বিগুণ লাভ হয়। এবার চার টাকা দরে চারা কিনে রোপণ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে সবজি চাষের জন্য খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। খরার জন্য ফলন হতে একটু দেরি হলেও লাভ ভালো হবে বলে জানান ওই কৃষক।
খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা গ্রামের কৃষক আজম আলী জানান, তিনি প্রত্যেক শীতে তিন বার শীতকালীন সবজি চাষ করেন। চারা থেকে বাজারে তোলার উপযোগী ফুলকপি চাষ করতে ২ মাস সময় লাগে। ইতোমধ্যে ১০ শতক জমির আগাম ফুল কপি ৩ হাজার ৫০০ টাকা মন দরে বিক্রয় করেছেন। এখন আরও ২০ শতক জমির ফুল কপি তৈরি হচ্ছে বাজারে যাওয়ার জন্য। আগাম শীতকালীন সবজি যার যতো বেশি আগে বাজারে আসবে, সে ততো লাভবান হবে।
কামারপুকুর ইউনিয়নের বাগডোকরা গ্রামের নারী কৃষক নাজমা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রতি বছর শীতকালীন সবজি গরমের মধ্যে চাষ করে বেশ আয় করে থাকেন। তার জমিতে সিম, টমেটো, মরিচ, বেগুন, ফুল কপি রোপণ করে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন নিয়মিত। আবহাওয়া ভালো থাকলে শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারবেন চলতি মাসের শেষ দিকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধিমান ভূষণ জানান, অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় আগাম সবজি চাষ করেন। এখন এই উপজেলাতে যে সবজি চাষ হচ্ছে, তা রবি মৌসুম শুরুর আগেই করে থাকে কৃষকরা। সবজি চাষে ফলন ভালো হয়। সাধারণত কার্তিক মাসে শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়। এ বছর ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়ভাবে আবাদ করা এসব সবজি এখনই বাজারে উঠতে শুরু করেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available