নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের ভূমিখেকোরা নির্ভার হয়ে তাদের দখলদারিত্ব অব্যাহত রেখেছে। অবৈধভাবে রেলওয়ের ভূমিতে গড়ে তুলছে বহুতল ভবন। আইনের ব্যবহার না থাকায় দখলবাজরা দখলবাজি করেই চলছে। শুধুমাত্র রেল ভূমিতে শপিং মল তৈরি করে মাসে মাসে লাখ লাখ টাকা পকেটে ভরছে ভূমিদস্যুরা।
সৈয়দপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে রেলওয়ের ভূমিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে আকাশচুম্বি ভবন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠছে ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন দোকানপাট। এমনকি এসকল ভবন নির্মাণে পৌরসভার নকশাও পাশ করা হয়নি। এই সকল বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন শহরের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তারা অবৈধ নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিতে প্রভাবশালী মহলের সহায়তা নিচ্ছেন। এর ফলে জনসম্মুখে চলছে দখলদারিত্বের বাণিজ্য।
এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ দখলবাজি রুখতে একেবারেই নিশ্চুপ। রেলওয়ের কোনো সম্পদ যাতে বেদখল হয়ে না যায় সেজন্য রয়েছে দুটি দফতর। অথচ রেলওয়ে সম্পদ রক্ষার্থে ওই দুই দফতরের কোনো কর্মকর্তাই মাঠে নামে না। তারা আইনের দোহাই দিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। রেল কর্তাদের দায়িত্বহীনতার সুযোগে দখল বাণিজ্যের অনিয়ম বর্তমানে সৈয়দপুরে নিয়মে পরিণত হয়েছে। রেলওয়ের সম্পদ অবৈধভাবে কেউ যাতে গ্রাস করতে না পারে সেজন্য রয়েছে রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগ। আর এই বিভাগকে সহায়তা করতে আছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। দখলবাজদের দখলদারিত্ব রুখতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইলে রেল পুলিশেরও সহযোগিতা নেয়ার নিয়ম বিদ্যমান। কিন্তু ইঞ্জিন সচল না থাকলে যেমন রেলগাড়ির বগি বা কোচ নড়ে না, তেমনি আরএনবি এবং রেল পুলিশও রেলওয়ের সম্পদ রক্ষার্থে আসে না এগিয়ে।
রেলওয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দেয়া তথ্য মতে, মামলা করেও রেলভূমি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২০২৩ সালেই প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্রও জমা দেন। আদালত সেমতে বিচারও শুরু করে। তবে আদালত চায় উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ। তথা জমির দলিল দস্তাবেজ। কিন্তু রেল কর্মকর্তারা ঠিক সময়ে আদালতে ভূমি মালিকানার স্বপক্ষে কাগজপত্রাদি হাজির করতে পারে না। এমন অবস্থা চলে বছরের পর বছর। এর ফলে ভূমি দখলবাজরা থাকেন বহাল তবিয়তে।
একই সূত্রে মতে, রেলওয়ের ভূমি সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র পাকশি, রাজশাহী ও পার্বতীপুর কানুনগো অফিসে সংরক্ষিত। এসব অফিস থেকে ভূমি মালিকানা নিশ্চিত করতে দফায় দফায় চিঠি প্রেরণ করেও মিলে না কাগজ। এমন অবস্থায় আইনি যুক্তিতে রেল কর্তৃপক্ষ পিছিয়ে পড়ে। আর বাহবার পুরোদমে স্বাদ নেন ভূমিদস্যুরা।
এজন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সৈয়দপুরে রেলওয়ের একটি কাচারি অফিস চালু থাকলে অনেকাংশে দখলবাজি ঠেকানো সম্ভব হবে। দখলবাজরাও পাবে আইনি শাস্তি।
রেলওয়ের ভূমি দখল রোধ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে কথা হয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারী কমান্ডিং অফিসার (অঃ দাঃ) আহসান উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রেলওয়ের সম্পদ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা তা দিতে বাধ্য।
এ বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কারখানা) (আইওডব্লিউ) শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভূমিদস্যুদের দখলবাজির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available