রংপুর ব্যুরো: সফলতার মুখে জেলার ‘তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প একটা সময় ছিল যখন কাঙ্খিত ফলন আর দাম না পাওয়ায় সরিষার আবাদ প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল কৃষক। এছাড়াও পশু-পাখির খাদ্যে ভূট্টার ব্যাপক ব্যবহার ও কাঙ্খিত দাম পাবার কারণে তার আবাদও বৃদ্ধি পেয়েছিল কৃষকদের কাছে। অন্যদিকে কয়েক দফায় ভোজ্য তেল সয়াবিনের দাম বৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছিল দেশবাসি। এই অবস্থায় কৃষি বিভাগের ‘তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প’র মাধ্যমে যেন আলোর মুখ দেখছেন তারা।
ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বেড়েছে সরিষার আবাদ। মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ আর মৌমাছিদের গুনগুন আওয়াজে এখন মুগ্ধতা ছড়ায় সরিষার ক্ষেত। জেলার বিভিন্ন স্থানে সরিষার ক্ষেত দেখে যে কারও মন আনন্দে মাতাবে অনায়েশে। এ বছর অতিমাত্রায় শীতে খরচ কিছুটা বাড়লেও ফসলের দাম পাবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা। এক একর জমিতে সরিষা আবাদে তাদের খরচ হয়েছে জমি ভেদে প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
একর প্রতি ২০-২৪ মন ফলন হলে তা বিক্রি হয় ৫০-৫৫ হাজার টাকায়। আর কিছু দিনের মধ্যেই সরিষা ক্ষেত থেকে তুলে মাড়াই শুরু করবেন কৃষকেরা। এদিকে কৃষকদের সরিষা মাঠ থেকে বাড়তি পাওনা খাঁটি মধু। মৌয়ালরা তাদের মধু আহরণের বাক্সো ইতোমধ্যে বসিয়েছেন মাঠে। মৌচাষের কারণে ২০ ভাগ ফলন বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহী করে তুলেছে সরিষা আবাদে। গত বছর সরিষার দাম ভাল পাওয়ায় এ বছর আবাদ বেড়েছে বলে ধারণা অনেকের।
অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এবার কিটনাশক বেশি স্প্রে করতে হচ্ছে। একারণে ফলনে প্রভাব পরবে বলে অনেকের আশঙ্কা। বাজার দরেও সিন্ডিকেটের হাত থেকে বাঁচাতে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ কামনা করেন কৃষকরা।
এবার বিভিন্ন সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ করা হচ্ছে। এতে সরিষার পরাগায়ণটা খুব সুন্দর হয় এবং ফলন ১৫ থেকে ২০ ভাগ বেড়ে যায়। এতে খাঁটি মধুর পাবার সাথে সাথে কর্মসংস্থানও বাড়ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহিদুল ইসলাম জানান, জেলায লক্ষণীয় ভাবে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পে আমরা নিরলশভাবে কাজ করে যাচ্ছি । আমরা তিন বছরে ৪০ ভাগ সরিষার উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষমাত্রা হাতে নিয়েছি ।
আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর জেলায় ১৯ হাজার ৭শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে, যা গত বারের তুলনায় ৩ হাজার ৮শ’ হেক্টর বেশি করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী বছরে আরও বাড়বে এমনটাই আশা করছেন তিনি।
মৌ-চাষে ১৫ থেকে ২০ ভাগ সরিষার ফলন বেড়ে যায়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সকলে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available