বাবুল আকতার, খুলনা ব্যুরো: খুলনার ডুমুরিয়া হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিতের খবর পাওয়া গেছে। ডুমুরিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বৈশাখী টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি ও দৈনিক খুলনার মফস্বল সম্পাদক শেখ হেদায়েতুল্লাহ। ১৬ অক্টোবর সোমবার দুপুরে রোগীদের ভোগান্তি, ওষুধ পাচার, মেডিকেল রিপ্রেন্টেটিভ, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান হেদায়েতুল্লাহ। এ সময়ে বর্হিবিভার্গের টিকিট কাউন্টার ও রোগীদের অপেক্ষমান স্থানে তিনি কথা বলছিলেন রোগীদের সাথে ।
হঠাৎ হাসপাতালের চিকিৎসক রিফাতসহ বেশ কয়েকজন মোবাইল ফোন ও বৈশাখী টেলিভিশনের বুম (মাইক্রোফোন) কেড়ে নিতে উদ্দত হন। এক পর্যায়ে হেদায়েতুল্লাহকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে হুমকি দেন ডা. রিফাত। অন্যথায় পুলিশ দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন। এসময়ে সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুল্লাহ বলেন, যেহেতু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিটিংয়ে রয়েছেন তাই ভিডিও করার জন্য অনুমতি নেয়া হয়নি। তাছাড়া পাবলিক প্লেসে ভিডিও করতে কারও অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয় না। তারপরেও প্রয়োজন হলে আমি কতৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।
একথা বলতেই চিকিৎসক নাইম, সাব্বিরসহ আরও কয়েকজন তেড়ে আসেন হেদায়েতুল্লাহর দিকে। এ সময়ে ডুমুরিয়া উপজেলার দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধি জিএম আব্দুস ছালাম ঘটনাস্থলে পৌছালে তার সাথেও দুর্ব্যবহার করেন রিফাত ও নাইম। এসময় তারা বলেতে থাকেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে সাংবাদিকতা শিখিয়ে দেবো। এমন দু-চারজন সাংবাদিক সবসময় আমাদের পিছনে ঘুর ঘুর করে।’
এসময় ২ জন সাংবাদিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে টেনে হিচড়ে নিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কাজল বিশ্বাস তার কক্ষ থেকে বের হয়ে আসলে সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুল্লাহ বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে ফোন দেন। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
এ ঘটনাকে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়াদ্দার দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন।
খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমান বলেন, সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া সাংবাদিকরা যে কোনও স্থানের ভিডিও করতে পারেন। এতে আইনগত কোন বাধা নেই। আর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ভিডিও করতে কোন সমস্যাই নেই।
তিনি আরও বলেন, কোন স্থানে যদি নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে কেবলমাত্র সেখানকার ভিডিও চিত্র ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, সরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানের ভিডিও করতে সাংবাদিকদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয় না। যদি সংরক্ষিত কোন স্থাপনা হয় বা নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে অনুমতি নিয়ে ভিডিও করা উচিৎ। এসময় তিনি চিকিৎসক ও সাংবাদিকের মধ্যকার অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available