সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তার সেচ ক্যানেলের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলি ডাঙ্গা পাড়া এলাকা দিয়ে চলে আসা সেচ ক্যানেল সংস্কার কাজ প্রায় ১৫ দিন পূর্বে শুরু হয়।
এক সপ্তাহ কাজ না হতেই ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যান। ১০ দিন থেকে জগাখিচুড়ি অবস্থায় পড়ে আছে সেচ ক্যানেলের সংস্কার কাজ। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তার সেচ প্রকল্পের আওতায় মূল ক্যানেলের সাব ক্যানেল এসফোরডি ক্যানেল নীলফামারী সীমানা হতে সৈয়দপুর বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন পর্যন্ত।
এ সাব ক্যানেলটি সংস্কার ও রিপেয়ারের সাব কাজ পেয়েছেন নীলফামারীর ঠিকাদার এ এইচ এম ছাইফুল্লাহ রুবেল। কাজের চুক্তিমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। মূল ঠিকাদার নাকি কাজ বিক্রি করে দিয়েছেন কয়েকজের মধ্যে। কয়েকদিন কাজ চললেও কাজের সময়, সমাপ্তিকাল, মূল কত কিলোমিটার এরিয়া, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম তার কোন বোর্ড লাগানো হয়নি।
ক্যানেল সংস্কার কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদার এলাকার লোকজনের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করছেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ জুলাই সরজমিনে ওই ক্যানেল পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারের কোন লোকজন নেই।
কেন কাজ বন্ধ, লোকজন নেই এ বিষয়ে কথা বলেন এলাকার বাসিন্দা, আব্দুল হালিম। তিনি জানান, ক্যানেলের পাশে আমার বাসা। ঠিকাদারকে কোনো সময় দেখি নাই এখানে। তবে ১৫ দিন পূর্বে লোকজন সংস্কার কাজ শুরু করে। তারা মনে হয় ৭ দিন কাজ করেছে। এরপর আর কাজে আসেনি। কাজ এখন পড়ে আছে।
সংস্কার কাজ করা অবস্থায় ঠিকাদার লোকজন কবর স্থান খুঁড়েছেন। ফলে কবরস্থান সেচ ক্যানেলে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে আমার বসতঘরের সাথে এমনভাবে গর্ত করেছে তাতে রান্না ঘর ও গোসল খানা ক্যানেলে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। এমন অভিযোগ করলেন এলাকার আরও কয়েকজন। তারা হলেন আব্দুস সাত্তার, ওবায়দুল হক, মো. মহুবর রহমান, আফতাব উদ্দিন, মোখলেছার রহমান, একরামুল হক বাসন ও কালাম উদ্দিন বাছাদুল ইসলাম।
তাদের অভিযোগ ঠিকাদার ক্যানেলের পাশের একোয়ার ভুক্ত মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে তুলছেন। এ সময় করা হচ্ছে গভীর গর্ত। যা দেখে মনে হল ক্যানেলের চেয়ে পাশের মাঠে খুড়া গর্তের গভীরতা চারগুণ বেশি হবে। বলা চলে ওই গর্ত বিপজ্জনক। এতো গভীরতা করে মাঠে তোলা অনিয়ম বলে দাবি করা হয়।
ক্যানেলের পাশে গভীর গর্ত করে মাটি তোলা, অন্যের জায়গা থেকে জোড় করে মাঠে কাটা, কারো কবরস্থান খুঁড়া, বসতবাড়ির পাশে গভীর গর্ত করা কাজের নিয়মের বাইরে। কেউ যদি এ ধরনের কোনো কাজ করে থাকেন তা হবে নিয়ম বহির্ভূত। এমন কথা বললেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রকৌশলী।
কাজ গোলেমালে করতে ইতিমধ্যে ঠিকাদার ওই কাজে স্থানীয় উদ্ভট কতিপয় যুবককে নিয়োগ দিয়েছেন। সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারের ওই সকল অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করতে সহায়তা করছেন।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান বলেন, কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদার অনিয়ম করেছেন। এমন অভিযোগ করেন এলাকার কিছু লোকজন। তাদের অভিযোগ পেয়ে আমরা এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সত্যতা পেলে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে জানা যায়নি কাজের কোন তথ্য।
ঠিকাদার ছাইফুল্লাহ বলেন, একটু সমস্যার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এটি কেটে গেলে কাজ শুরু করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available